সেঃ আচ্ছা বলত ইংরেজি নাটকের জনক বলা হয় কাকে ?


আমিঃ কেন, উইলিয়াম শেক্সপীয়ার ।


সেঃ তুমি কি করে জানলে ?


আমিঃ তুমি আগে বল, তুমি কি ভাবে জানলে ?


সেঃ কেন, ফেসবুক থেকে ।


আমিঃ হুম, খুব ভালো ।


সেঃ এবার বল, তুমি কি করে জানলে ?


আমিঃ কেন, শেক্সপীয়ারের থেকে ।


সেঃ মানে, সেটা আবার কি রকম ?


আমিঃ শেক্সপীয়ারের সৃষ্টির কাছ থেকে ।


সেঃ সেটা কিভাবে ?


আমিঃ স্কুল জীবনেই শেক্সপীয়ারের অনেক লেখা আমার পড়া হয়ে যায়, এই মুহূর্তে হ্যামলেট,কিং লিয়ার, ওথেলো, ম্যাকবেথ, জুলিয়াস সিজার, টুয়েলফথ নাইট, রোমিও আন্ড জুলিয়েট, টেম্পেস্ট, মার্চেন্ট অব ভেনিস, ট্রিমিং অফ দি শ্রু সহ আরও কিছু বইয়ের নাম মনে পড়ছে ।


সেঃ বাহ, স্কুল জীবনেই এতো কিছু !


আমিঃ না, সব স্কুল জীবনে নয়, স্কুল জীবনে প্রথমে কিছু অনুবাদ বই দিয়ে পড়া শুরু করেছিলাম পড়ে মূল বইও বেশ কিছু পড়েছি ।


সেঃ তাহলে তো তুমি শেক্সপীয়ারের অনেক বড় একজন ভক্ত ও পাঠক । স্কুল জীবনে শেক্সপীয়ারের এতো বই কিভাবে পেলে ?


আমিঃ আমি, আসলে সেরকম কিছু না, আমার এক আত্মীয়া ছিলেন ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী । উনার কল্যানে শেক্সপীয়ারের অনেক বই বিনা আয়াসে হাতের কাছে পেয়ে যাওয়াতেই পড়া হয়ে গেছে ।


সেঃ সেরকম কিছু না মানে কি ? শেক্সপীয়ারের লেখা তোমার ভালো লাগেনি ?


আমিঃ গ্রীক দার্শনিক এরিস্টটল একই সঙ্গে ভাষাত্বত্ত, সাধারণ জ্ঞান, দর্শন, গনিত, জীব বিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থ বিজ্ঞান, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি সহ আরও বহু বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন ।


সেঃ শেক্সপীয়ার ভালো লাগা না লাগার সাথে এরিস্টটলের কি সম্পর্ক ?


আমিঃ আসলে এরিস্টটলের আমলে জ্ঞান বিজ্ঞানের সমস্ত শাখা ছিল মূলত প্রাথমিক পর্যায়ে । বলতে গেলে একেবারে শূন্য বা ফাঁকা । তাই উনার একার পক্ষে এক জীবনে এতো বিষয়ে অবদান রাখা সম্ভব হয়েছে । আজ একজন মানুষ তার সারা জীবনের চেষ্টায়ও জ্ঞান বিজ্ঞানের একটি শাখার সমস্ত বিদ্যমান জ্ঞান অর্জন করতে পারে না, শাখা বাদ দিলাম, কোন কোন ক্ষেত্রে একটি উপশাখার সমস্ত জ্ঞান অর্জন করাও তার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না । উদাহরণ হিসাবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি উপ শাখা Genetics বা প্রকৌশল বিদ্যার একটি শাখা Artificial Intelligence এর কথাই বলা যেতে পারে । কোন মানুষের পক্ষে তার সমগ্র জীবনের সাধনা দ্বারা এর কোন একটির সমগ্র জ্ঞান আহরণ সম্ভব নয় ।


সেঃ তুমি কি তাহলে বলতে চাইছ এরিস্টটলের মত শেক্সপীয়রের আমলেও সাহিত্যের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ ছিল না তাই উনার পক্ষে এই অবস্থানে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে ।


আমিঃ এটাতো অবশ্যই কিছুটা সত্যি, তবে আমি সরাসরি এ কথা বলবো না, কারন সাহিত্যের প্রতিটি শাখা কোন না কোন সময়ে এভাবেই কারো কারো একক বা যৌথ প্রচেষ্টায় সমৃদ্ধ হয়েছে ।


সেঃ তবে তুমি কি বলতে চাও ?


আমিঃ আসলে শেক্স পীয়ারের নাম শুনে যে মুগ্ধতা নিয়ে উনার লেখা পড়তে গিয়েছিলাম সেটা আমি ধরে রাখতে পারিনি । উনার লেখার ধরন, কাহিনী বিন্যাস বা অন্তিম পরিণতি আমার হৃদয় ছুঁয়ে যেতে পারে নি ।


সেঃ কেন কেন ?


আমিঃ যে স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততায় কোন লেখা হৃদয় ছুঁয়ে যায় তা উনার লেখায় আমি পাইনি, অতি নাটকীয় বা আরোপিত বলে মনে হয়েছে উনার লেখাকে, আর কমেডী ও ট্র্যাজেডি নামে উনি নাটকের যে দুটি ধারা তৈরি করার চেষ্টা করেছেন তাও বাস্তবসম্মত নয় । বাস্তর সাধারণত এর মাঝামাঝি একটি মধ্যবর্তী পথ দিয়ে চলে । কোন গন্তব্যই চুড়ান্ত নয়, জীবনের যাত্রা পথে ঘটনা প্রবাহে বদলে যেতে পারে জীবনের গন্তব্য, তাই চূড়ান্ত মিলনাত্মক বা বিয়োগান্তক কোন ব্যাপার জীবনে থাকতে পারে না ।আমি আমার কথা বললাম, এটি আমার একান্ত নিজস্ব কথা, কেউ কেউ হয়তো এ বিষয়ে আমার সাথে একমত নাও হতে পারেন, সে বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।


দৃষ্টি আকর্ষণঃ এটি Dialect বা কথোপকথন ঘরানার একটি লেখা, লেখাটিকে তার নিজস্ব আবহে তুলে আনার জন্য অতিরঞ্জিত কাব্যিকতা দেয়া হয়নি ।