হুমায়ূন আজাদ এই তালিকার প্রথম উৎসর্গ নয়,
অভিজিৎ রায়ও হয়তো বলিদানের শেষ নাম নয়,
হয়তো কেন বলছি আমি সর্বশেষ নাম তো নয়ই,
সময়ের মত নিত্য বহমান এই তালিকা জাতিগত
লজ্জার পীচঢালা পথ ধরে বয়ে চলে যাবে অনন্তে
তবু ক্ষান্ত হবে না উদ্ধত ঘাতকের সশস্ত্র স্পর্ধা,
এ মৃত্যু তালিকার কোন শুরু নেই, শেষও নেই,
এ নামের মিছিল ক্রমশ লম্বা হতে হতে অনায়াসে
ছুঁয়ে যাবে মহাকাল তবু শেষ হবে না সে পদযাত্রা,
রাজীব, বিশ্বজিৎ সহ আরও কতশত জানা অজানা
ক্ষত বিক্ষত রক্তাক্ত নাম হয়তো ক্ষমতার মসনদের
দুর্লঙ্ঘ্য ছায়াঢাকা কালো ইতিহাসের রাজসাক্ষীতে
সুবিচারের মিথ্যে আশায় ভুল আদালতে অসহায়
দাড়িয়ে আছে সাগর রুনির রক্তাক্ত বিশ্বাসের পাশে,
রক্ত ঝরেছে, ঝরছে, ঝরবে আবহমান কাল ধরে,
রক্তের স্রোতে ডুবে যাবে বিবেকের শেষ আশ্রয়,
এ রক্তের নদী খুঁজে পাবে না কোন সমাপ্তির সাগর,
রক্তের আলাদা করে কোন বিশেষ নাম থাকে না,
শিরায় শিরায় বহমান রক্তের একটাই নাম জীবন,
গড়িয়ে যাওয়া পিচ্ছিল রক্তের একটাই রঙ লাল,
কালো পীচঢালা রাজপথ ভিজে লাল হয় আমার
স্বজনের রক্তে, সময়ের ধুলো ঢেকে ফেলে সে লাল,
তখন আবারও রক্ত ঝরে তৈরি হয়এক নতুন ক্ষত,
পুরনো ক্ষতেরা বিচারের প্রহসনে আবারও রক্ত ঝরায়,
কিছু অপারগ প্রশ্ন উত্তর খুঁজে ফেরে অসহায়ত্বের কাছে,
ভিন্নমত সইবার ক্ষমতা কি রাখে না এই সভ্য অন্ধকার ?
মৃত্যু খড়গের দুঃসহ ধারে যে দুর্বৃত্ত নিজের মতামত লেখে
রক্তের কালিতে তার কি ছিল না কণ্ঠ জবানবন্দী জানাবার ?
তোমাকে থামাতে পারে এমন কোন শক্তি নেই এই চরাচরে,
তোমাকে থামারাব মত মানবতা আজ আর কোথাও বেঁচে নেই,
নিপীড়িতের জন্য কোন আইন নেই, সুবিচারের কাঠগড়া নেই,
কোন আশা নেই, মাথার উপর ঈশ্বর নেই, আমরা অপেক্ষায় রয়েছি
আর কত রক্তের নদী বইয়ে ঘাতক তুমি ক্লান্ত হয়ে থামবে বল শেষে,
নারকীয় পরিতৃপ্তি শেষে ঘাতক তুমি কবে নিজ থেকে শ্রান্ত হয়ে ক্ষান্ত দেবে।


উৎসর্গঃ প্রিয় লেখক হুমায়ূন আজাদ