অতসী দি, আমার পুরুষ হবার রাতে তুমি এমন বেফাঁস হেসো না,
ও হাসিতে উত্থিত আকাশ কামনা বিধুর হয়ে মুচড়ে ওঠে বালুবেলা,
স্বেচ্ছাচারী বাতাসের ভ্রূকুটি নৈঃশব্দের ছায়াশরীরে হানে মদির বাণ,  
ও হাসিতে ফেননিভ বাসনায় হাঁসফাঁস করে প্রাগৈতিহাসিক অন্ধকার,
সহস্র রাতের ধ্যান ভেঙে জেগে ওঠে বেঁচে থাকা শেষ আদিম শীৎকার,
ও হাসিতে তোমার মুখ রমণীয় হয়ে স্পর্ধার বুকে জাগায় লোমশ আগুন ।        


অতসী দি, আমার পুরুষ হবার রাতে এতোটা বেফাঁস কাছে এসো না,  
তোমার স্পর্শের নাজুক উত্তাপ বিদেহী রাত্রিকে বড় ব্যাকুল করে তোলে,
তোমার সুগ্রন্থিত মোহন বুকের জৈবিক ধুকপুক স্মৃতিকোষে সংক্রমিত হয়ে
মৌ গন্ধ মহুয়া রাতের নেশাধরা উত্তাপে ঘন হয়ে জমে যায় জোনাক সুখ,
তোমার ধানসিঁড়ি শরীরের উথাল পাথাল জোয়ার ভাটার বিষুব টানে
বুকের কাছাকাছি জমে থাকা বিশ্বাসের পলি সিক্ত হয়ে দুলে ওঠে গন্তব্য ।  

অতসী দি, আমার পুরুষ হবার রাতে এই হাতে বেফাঁস হাত রেখো না,
তোমার পরিচিত হাতের নির্দোষ স্পর্শ হঠাৎ কেমন অচেনা সম্মোহন হয়ে
শিহরণের তোড়ে খুলে যায় সদেহ ভালোলাগার অনতিক্রম্য পাতাল দুয়ার,
তোমার মমতাময় হাত আজ জলছাপ বদলে হয়ে ওঠে রমণীর করতল,  
ইতিহাসের বিদীর্ণ পাতা থেকে পথ ভুলে উঠে আসা সারিবদ্ধ বিষপিঁপড়ের
কামড়ে উদ্বেল হয়ে ওঠে পাহাড় পর্বত গিরিখাতে মোড়া শারীরিক ভূগোল ।    


অতসী দি, আমার প্রেমিক হবার রাতে এই চোখে বেফাঁস চোখ রেখ না,
প্রদোষের প্রশ্রয়ে উৎসারিত তোমার মৃত্তিকা চোখের নিঃসীমে বয়ে চলা
ঘাগট নদীর জলজ দুঃসাহস সখেদে জানায় নিয়ম ভাঙার দুর্বিনীত আহ্বান,
সম্পর্কের সীমারেখা তার ছেদ বিন্দুতে পুতে রাখে দুঃসহ কষ্টের মেঘদল,  
সব জেনেও কিছু না বুঝতে যাওয়া তমশাচ্ছন্ন বোধের প্রহেলিকায় তুমি
পতঙ্গ পুরুষের জন্য নির্দোষ প্রশ্রয়ে জ্বেলে রেখোনা সুকুমার মারণ শিখা ।