নিশীথ জোয়ার
--------মোহাম্মদ হাসানুর রহমান


ভরা যৌবনা জোয়ার মাতলো মধ্য রাতের পর
সর্পিল ফণী ললন্তিকা গলে, নিশীথ জলতরঙ্গে ৷
জলধকুমারী এলো মহাকর্ষ আকর্ষণে
শত সহস্র ঊর্মিমালা সাথে, তর্জন-গর্জনে
চতুর্বিংশতিতম ঘণ্টা এবং বায়ান্ন মিনিট পরে,
ভরাকটালে ৷


রুপোলী চাদরে মোড়া খোলতাই যৌবন
উদ্ধত গ্রীবা, রুদ্রমূর্তি, নীলাম্বরী অপরূপা
ঢেউ খেলে অঙ্গে প্রত্যঙ্গে-৷
সায়রকন্যা জলকেলি করে
শরদিন্দু সমীরনে, সলিলসংগীতে,
ঝিনুকের মেখলায়- বঙ্কিম কটিদেশ দুলায়ে ৷


স্ফীত জল সহসা কুঞ্চিত, মহাকর্ষবলের প্রভাব
সময়ের কাটা অঙ্কের নিয়মে ঘুরছে কক্ষপথ,
বিশাল জলরাশি উপকূল ছাড়ে গহীন সাগর পানে
উত্তর-দক্ষিণে আসিলে জোয়ার, ভাটাও সমকোনে ৷
নিশা ঘুমে যায় শশীও হারায় ক্লান্ত ঊর্মিমালা
নতশির গ্রীবা বিমর্ষ বদনে ফিরে যায় সাগরবালা ৷


নীলাম্বুধি বলে, শোন নন্দিনী-
সর্বংসহা সর্বোত্তম জানিও, অটল থাকিও সত্য-ন্যায়ে
ধন্য জীবন স্ব-কর্মে শাশ্বত, সেবক রবে ত্যাগের ব্রতে ৷
অনিষ্টকারী বন্ধু নয় কারো, পাইনা আসন হৃদয়ে
বন্ধু চিনিবে দুর্দিনে, দুঃখের দিনে যে রবে পাশে ৷
জোয়ার-ভাটা মহাকার্ষ বলে ঘুরছে চক্রাকারে
সময় আবর্তে মধুরিমা হারায় নিশীথ জোয়ার ফুরলে ৷