রাজপথে স্লোগানের অভ্রভেদী নির্ঘোষের চিহ্ন গেছে রেখে
শুষে নিলো সব জ্যোতি পাষাণের সে বুলেট রুধিরে রঞ্জিত;
সভ্যতার সম্ভূতের আবেশ হয়েছে বেশি -- উঠে প্রাণ চেখে
হায়েনার কৃষ্ণ থাবা জেগেছে যে রাজপথে করালে গুঞ্জিত।
নির্মোক ফেটেছে যেন ডালিম বিদীর্ণ করে রক্তের ফোয়ারা
তপ্তশ্বাস ফেলে গেছে ফাল্গুনের কুসুমের ভ্রূণ ভেঙে দ'লে;
মানবিক চিৎকারের ফসিল কাহিনী আজ জেগে উঠে সারা
বিদ্রোহী চঞ্চুতে দেখা পলাশের সোনা আভা দ্রোহীগান বলে।


মন্দ্রিত রাগিণী আজ বেজেছে যে রাজপথে - তমিস্রার পিচে
কোন এক শিশু সেথা যীশুর মতোন করে তুলে দ্রোহী গান;
তার সেই নির্ঘোষের ডাক শুনেছে মানুষ -- মুছে দিতে বিছে
তখন দেখেছি আমি আকাশের গায়ে মাখা - লেলিহান তান।
বিদীর্ণ পথের আশা রক্তের এ ধারা দেবে ---- ভাষা স্বাধীনতা
কোকিলের কণ্ঠে শুনি তারাও চাইছে আজ - সুবহে সাদিকে;
নিজের ভাষায় গান গেয়ে যাবে বলে পিকে জাগিয়েছে কথা
দেখি আমি রাজপথে নাভিশ্বাস তোলা মন হয়ে গেছে ফিকে।


নবীন সূর্যের দিকে চেয়ে আছে লোকে আজ সেও চায় ভাষা
আশা জাগানিয়া গান বাজাতে না বাজাতেই ছুঁড়ে দেয় গুলি;
ভেঙে হলো খানখান ভার্সিটির আত্মজের -- নিজ কল্প আশা
আত্মজারা বসে নেই হয়েছে বাহির তারা পেতে বাংলা বুলি।
মায়ের কোলের শিশু দুগ্ধ পান ছেড়ে দিয়ে কাঁদিছে বাংলায়
মায়ের এ হাহাকার শোনেনা যে হানাদার - নিতে তাজা প্রাণ;
কে বা দেবে আজ আর পড়তার বোল দ্বারা -- রাজপথে সায়
তখনো নামেনি সন্ধ্যা বিকেলের ঘোর কেটে দিলো নব তান।


এভাবে এসেছে জানি মাতৃভাষা দেশ বুকে -- ছিনিয়ে শহীদ
সমাধির বুকে দেখি এপিটাফে আঁকা আছে নামেরি ফলক;
রফিক, জব্বার কিবা বরকত প্রাণ দিলো -- নেমে এলো ঈদ
আজো তাই গান গাই নিজের ভাষার বেগে ফেলেছি পলক।