অতি সাধারণ আমার এ মন দূর্বাঘাসের মত
পায়ের নিচেতে দ'লে যায় লোকে করে চলে শুধু ক্ষত।
শিশিরকে বুকে লয়ে আমি আজ নিজেকে করেছি ভারী;
আমার পৃথিবী শিশির বিন্দু তারে বয়ে যেতে পারি।
আমার মতন অতি সাধারণ লোক;
মাতে শুধু জানি জগতের মিছে শোক।
পারিনা ফলাতে কোন বা শস্য আমার শরীর 'পরে;
মৃত্তিকা গুণে আমি জেগে উঠি ভরে।
আমাকে করেনা কেউ মনে চাষ জানি;
পোহাই যে হয়রানি।
নিজে নিজে জাগি হয়েছি বিবাগি আজ
কাকের মতন কর্কশ গলে মাখি গান কারুকাজ।
কাকের যেমন রয়ে যায় শুধু তার গোত্রের সুধা;
আমার তেমন ক্ষুধা।
নিজ নির্মোক জ্বলে বিবর্ণ গোধূমবর্ণ ধরে;
পুষে রাখি অন্তরে,
পারিনা করতে কোন প্রতিবাদ আমি;
দেখতে মন্দ, গলে নাই গান একলা কাটাই যামী।
আছে শুধু নিজ কাব্য মহিমা লিখে যেতে পারি বেগে;
তা ছাড়া পারিনা বয়ে যেতে প্রাণ লেগে।
এই পৃথিবীর কাকেরা যেমন কা কা স্বরে ডেকে চলে;
মানুষে রিক্ত হয়ে যেন তাই তাদের সবেরে দ'লে।
আমার কবিতা তাই যেন দেখি পুষে;
শুনে কিছু লোক আবার উঠেছে ফুঁসে।
আমি জানি ঘাস মূল্যহীন এ প্রাণ বয়ে চলি ভুখে;
তবুও আমার রয়েছে পুষ্টি আমার গানের সুখে।
ঘাসের বুকেতে গোরু কি ছাগল খেয়ে;
পুষ্টি পেয়েছে বলে উঠে তারা ধেয়ে।
তেমন যে কিছু মানুষের কাছে পেয়েছি আমার দাম;
পূরাই মনস্কাম;
তা না হলে সেই ইটের চাপেতে হয়ে যাই বিবর্ণ;
কিছু লোকে শোনে দিয়ে তাদের কর্ণ।
শুধু অবহেলা আমার ললাটে জোটে;
তাই দিয়ে মন ছোটে,
তাই দিয়ে হাত লিখে চলে সব বেদনের নিজ কথা;
জাগে মনে ব্যাকুলতা।
সাধারণ আমি তবু অনন্য ঘাসের গুণের দ্বারা;
করেছি পাগলপারা।
আমার কবিতা যারা মেখে আছে মনে;
তাদের জন্য আমার কবিতা প্রতিদিন করে ঘনে।
কবিতা আমার ঘাসের পুষ্টি, কবিতা কাকের দল;
পেয়েছি কাব্যে তল।
সাধারণ নই তবু সাধারণ অবুঝ হৃদয়ে বুঝি;
বিধাতার দান আমি যে মানুষ তাই মানুষকে খুঁজি।
আজ শুধু জাগে সাধারণ আমি আগে;
তাই ফোটে ফুল আমার বেদন বাগে।
তাই বুঝি আজ বলে যেতে চাই পাখির গানের মত;
ফাগুন কালের কোকিলের রূপ পাইনা বলে আহত।
সবাই পিকের গান শুনে যায় লেগে;
চাই আমি তাই জেগে।
সাধারণ লোক বলুক সবাই এ অহং দ্বারা চলি;
অলংকার যে চাইনি আমার চেয়েছি গীতাঞ্জলী।