কোথায় আমার মায়ের হাসি কেড়ে নিলো আজি রণে,
ছুটছি কেবল যুদ্ধে যেতে দেশের ভালে আপন মনে।।
সুখের গায়ে আগুন চাঁদর    পাইনা মায়ের কোমল আদর,
ঘরে আছে আমার মাতা পুত্র ফেলে করুণ ক্ষণে।
দুন্দুভি তার বুকের ভেতর পাঁজর কাঁপায় তিক্ত স্বনে।।

আজকে আমার মাদল বাজে, ডঙ্কা বাজে মন্দ সুরে,
মায়ের হাসি দেখিনা আর চারিদিকে শ্বাপদ পূরে।।
কেমন করে ঘুমাবো মা          প্রাণ লয়ে যাই নিত্য কোমা,
মরণ হাতে বইছে প্রাণে লুকাই সকল সঙ্গোপনে।
দুন্দুভি যে বুকের ভেতর পাঁজর কাঁপায় তিক্ত স্বনে।।

ছুটছি মাগো লাশের গায়ে পা ফেলেছি বাধ্য হয়ে,
স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে মা চলছি আমি সত্য কয়ে।।
ওদের আছে ঢাল তলোয়ার    নাই কিছু আর হাতে আমার,
বুকের মাঝে তাজা প্রাণে বলছি মাগো বাজির সনে।
দুন্দুভি আজ বুকের ভেতর পাঁজর কাঁপায় তিক্ত স্বনে।।

আন্দোলনের ভাষা সবাই জানে মাগো শিক্ষা পেয়ে,
যৌবনে যেই রক্ত ফোটে ভুলবো কিরূপ গীতি গেয়ে।।
মনের প্রেমে দেশের কথা           করাল হাওয়া বইছে তথা,
ফিরবো মাগো তোমার বুকে আছি ভাবের নিমগনে।
দুন্দুভি তাই বুকের ভেতর পাঁজর কাঁপায় তিক্ত স্বনে।।

কত লোকের প্রাণের মায়া কত লোকের লাশের গাড়ি,
দেখেছি মা চোখের তরে কিরূপ ফিরি বলো বাড়ি।।
পারবোনা মা তাদের ফেলে    কাপুরুষ নয় তোমার ছেলে,
বিজয় এনে তবেই মাগো শ্বাপদ মুছে আসবো ধনে।
দুন্দুভি তাই বুকের ভেতর পাঁজর কাঁপায় তিক্ত স্বনে।।

চারিদিকে দেখি আঁধার হটাৎ একটা বুলেট এসে,
কেড়ে নিলো মাগো ওরা আমার পায়ের শক্তি শেষে।।
দাঁড়াতে আর পারিনা যে       তোমার আনন চোখে বাজে,
জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়ি ফিরে আসি আপন পণে।
দুন্দুভি তাই বুকের ভেতর পাঁজর কাঁপায় তিক্ত স্বনে।।

ফিরি মাগো তোমার কোলে কাঁদছ দেখি কিসের সুখে,
শুনি আমি স্বৈরাচারীর পরাজয় আজ শোনার ভুখে।।
তবু দেখি কিসের ধোঁয়া         কাঁদছ গেছে কি আর খোয়া,
বেঁচে আছে তোমার ছেলে শ্বাপদ ছেড়ে এই লগনে।
দুন্দুভি আজ বুকের ভেতর হৃদয় কাঁপায় মধুর স্বনে।।