হে লাল, নীল, সবুজ কিংবা বেগুনি টিপ—
তুমি আর শুধু সাজ নয়, তুমি এখন
একটি লালপিক্সেল, এক চিপকোড চেতনা,
ইনস্টাগ্রামের প্রতিবিম্বে, কিংবা
ভাঙা আয়নার প্রান্তে ঝুলে থাকা বোধ।
তোমার বুকজোড়া নৈঃশব্দ্যে
ফেসবুক-ফিল্টারে হারিয়ে যাওয়া নারীর মুখ
আবার ফিরে আসে মাটির গন্ধে,
নখের আঘাতে গড়ে ওঠা ইতিহাসে।
হে টিপ—
তুমি রোকেয়ার চোখের স্বপ্নে জ্বলা অক্ষর,
তুমি আশালতা পালেদের কণ্ঠে ওঠা গান
যা মেটাভার্সের শূন্যতায় নয়,
রক্তমাংসের রাজপথে গাইতে হয়,
"আমার দেহ মানে সম্মান, আমার মুখ মানে মুক্তি।"
তুমি শুধু কপালের প্রসাধন নও—
তুমি ক্ষোভের আগুনে চুম্বনের চিহ্ন,
কপাল ছুঁয়ে উঠে আসা সকালের মতোই অবিনাশী।
তোমার ছায়ায় জেগে ওঠে বেগম রোকেয়া
ফিরে আসে তারা, যারা নির্বাসন নয়, প্রকাশ বেছে নেয়।
ধুলো জমে থাকা রঙিন প্লেকার্ডে
আজও লেখা থাকে—
"যতবার নারীকে অসম্মান করো,
প্রতিবার একটি টিপ তীব্র হয়ে ওঠে।"
স্মৃতি কি শুধুই করুণ?
না, সে এক মহাজাগতিক ট্রিগার—
যেখানে টিপ হয়ে ওঠে অস্ত্র, ভাষা, দর্শন—
একটুখানি রক্তবিন্দুর মতো
যা সময়কে রঞ্জিত করে
মৃত্যুকে কাব্যের মতো উপহাস করে।
তাই এসো—
ঘোরের ভেতর থেকেও জেগে থাকো,
বটমূল নয়, এখন সার্ভারের প্রান্তেও
তোমার বিদ্রোহ লেখা হোক
বিন্যাসহীন কোডে, অসমাপ্ত কবিতায়।
কারণ, কবিতা শুরু হয় ঠিক তখনই—
যখন একজন নারী তার টিপ খুলে রেখে বলে,
"এবার আমি কথা বলব, এবং আমাকে থামাবে না কেউ।"