আয়নার পাশে দাঁড়িয়ে
আমি দেখি
চোখে বাঁধা পুরনো এক গামছা;
যেমন বাঁশির ঘায়ে
ঘুম ভাঙে না আর নদীর
তেমনি—
বিশ্বাসের নিচে জমে আছে
এক থালা নীরব রক্ত

নিজেকে জিজ্ঞাসা করি—
কে আজ আত্মা কুরবান দেবে?
কে, শুধু ছুরি চালাবে?

একটি শিশুর চোখ বলে
‘আমার বাবা দিয়েছিলেন কান্না
যা মিশে গিয়েছিল ধানের গন্ধে
পূর্বপুরুষের করোটিতে ’

নগরের কাঁচে ঝলমল করে সেলফি
আর পথের পাশে
এক থালা স্বপ্ন ঘুমায়
মাটির হাড়ির পাশে
যেখানে প্রভু নয়
ভাতের গন্ধে জেগে ওঠে
এক ক্ষুধার্ত শরীর

ভোগের উৎসবে বাজে লাউডস্পিকার
ভিতরে-ভিতরে
অদৃশ্য এক আর্তনাদ
বাঁশবনের মতো দুলে ওঠে

বিলবোর্ড বলে
‘ঈদ মানে আনন্দ!’
কিন্তু গ্রামের চাটাই জানে
ঈদ মানে ভাগ হয়ে যাওয়া রক্তও

মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে
হাতে কাঁচা বেগুনের থলে
চোখে জ্বলজ্বলে প্রতীক্ষা
তারা চায় না মাংস
না কোনো ফেসবুক পোস্ট
শুধু একটুখানি সম্মান

ইব্রাহিমের দৃষ্টি—
চিলের মতো, দূরগামী
পাহাড়ের ওপারেও খোঁজে জ্যোৎস্না
অথচ সে দৃষ্টি ঢাকা পড়ে আজ
শপিং মলের ল্যাম্পে
মহান রবের নামে আছে অফার
আর অফারের নামে
নেই কোনো আত্মত্যাগ

শেষ রাতে—
এক ধুলোসাদা পায়রা ডাকে
‘ত্যাগ করো—তবু রক্ত নয়!
ভাঙো কেবল অহংকার
সত্যিকারের কুরবানি হলো
নিজেকে দান করা নীরবে ’

প্রকৃত ত্যাগ—
রক্তে নয়, শব্দে নয়
মৌন উৎসবে
যেখানে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই
খোদার পথে হাঁটার শুরু...।