প্রাগৈতিহাসিক যা কিছু আমার চারপাশে ছিল
তার প্রতিটি অনুপাতে লুকিয়ে থাকে
শেষ হয়ে যাওয়ার কুহক— অকস্মাৎ
পথের ধুলোর মতো জমা প্রিয় মুখ,
দিগন্তের কোণে ভিখারি চোখে
শস্য-শ্যামলিমায় প্রচ্ছন্ন আলোয় জ্বলে ওঠে
পশ্চিমা অতীতের পুনর্বাসন শিবির।

পরিত্যক্ত ঘর, ঘাসে ঢাকা মন্দির-মসজিদ
দীর্ঘ সরীসৃপ ছায়ায় শিশুদের খেলার মাঠ
নির্বাসিত দুপুরের মতো একা হয়ে থাকে-
নির্বাসিত কথামালায় একলা সূর্যাস্ত
চঞ্চল ঝর্না, ভোরের শিশির-স্নাত শরীর।

বেলাশেষে যা কিছু আমার চারপাশে ছিল স্বচ্ছ
পথ ধরে ফেরে কেবল পাস্পরিক শূন্যতা
তবুও ভোর আসে শিশিরে ধোয়া শরীর নিয়ে,
শ্মশান পেরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন ঈশ্বর
জীবন-মৃত্যুর মশাল জ্বলে ওঠে হঠাৎ কোনো দিন,
কোনো সন্ধ্যায় যা কিছু ফেলে এসেছি
ভিটেমাটি, ধ্বংসাবশেষ, নামহীন দল-গোত্র
সব একসঙ্গে ফিরে আসে স্মৃতির অনুপ্রবেশে।

মৃত আমগাছের ছায়ায় পড়ে থাকে অবিস্ফোরিত বোমা
গাজা উপত্যকায় শরণার্থী শিবিরে স্মৃতি দীর্ঘযাত্রী
হঠাৎ বাস্তুচ্যুত কিছুদিন চলে পা বদল করে
এখানে যা আছে, তা-ও তো ঠিক স্বস্তি নয়—
ভরদুপুরে ছিনতাই-আতঙ্ক, রাহাজানি
দেয়ালে আঁকা শ্লোগান, মনুমেন্ট
গলির অন্ধকারে গুপ্তহত্যা, ষড়যন্ত্র
পক্ষ-প্রতিপক্ষের রক্ত-মিশ্রিত মানচিত্র
ল্যাম্পপোস্টের আলোয় সব মুখহীন জনতা।

শূন্যতাকে মাথার উপরে তুলে সন্ত্রাস,
পায়ের নিচে কেবল গড়িয়ে যায় গোলা
একটানা আবহমান দুঃসময়- পররাষ্ট্রনীতি
কূটকৌশলী চক্র সব মিলে ঘিরে ধরে আমাকে
মজ্জার অন্ধকারে বেজে ওঠে এক জলতরঙ্গ,
দাঁড়িয়ে থাকি অনিশ্চিত বেকার জীবন!