মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত আমার স্বদেশ;
পলিমাটির উর্বরে নীলের গভীরে লুকিয়ে থাকা বিষাক্ত ছোঁয়ায়
ছেয়ে যায় বাঙলার চতুর্দিক;
তার রূপ আর সৌন্দর্যে গেঁথে থাকে করুণ অশ্রুমালার সুর সংগোপনে।
চাঁদ, জ্যোৎস্না, শিশির, ঢেউ, অরণ্যে, চন্দ্রমল্লিকার বন,
বৃষ্টির ফোঁটা আজ দুরারোগ্য ব্যাধির কঠিন স্তূপে পরিপূর্ণ;
নিসর্গ সন্ধ্যা আর সুনিবিড় নীলিমার ঠোঁটে ছুঁয়ে যায়
জ্যোতির্ময় দৈব স্পর্শে দুর্বিনীত শক্তির কঠিন ব্যাধি।


পবিত্র আঙুলের ছোঁয়ায় খেলা ক’রে জ্বলজ্বলে প্রাণঘাতী অন্ধ  
শত্রুর কালো ছোঁয়ায়,
যারা সব সম্পর্ক ছিঁড়ে জন্ম নেয় গভীর অন্ধকারে;
যাদের নিসর্গমালা গাঢ় স্বপ্নলোকের সঙ্গীতের সুরে
রচিত ক’রে আত্মহত্যায় উৎসাহিত সুনিবিড় সম্ভাবনার সকল সুড়ঙ্গে;
ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইলের হৃদয় ও রক্তের হিমে সবুজ উদ্ভিদ
ভেদ ক’রে আজ সর্বব্যাপী লিপ্ত তরুণীর ধর্ষিতদেহের
দুর্দান্ত রক্ত ও মাংসের হিংস্র মারাত্মক প্রতিযোগীতা;
যার টলোমলো আঁখি কোণে বিষাদময় অশ্রুবিন্দু ঝ’রে পড়ে
উজ্জ্বল সোনালী দিনে অলৌকিক ভাবনার নদী সরোবরে।


অষ্টাদশী কন্যার ভয় আজ তার বেড়ে উঠা কোমল শরীর,
বাঙলার দুর্ভেদ্য নিশীথে যা ছুঁয়ে যায় নিসর্গের রৌদ্রলোকে;
অলৌকিক ছায়ায় ভেসে আসা শ্রাবণের মসৃণ ফাল্গুন বিকেলে
মধুর রাত্রির উপমা দিয়ে যায় শব্দহীন চাঁদ;
তার বিস্ময়ে অলৌকিক ভাবনার শিল্পীর প্রজ্ঞায় উজ্জ্বল মহিমায়।
সেই তরুণী আজ কোমল গানের সুর;
সন্ধ্যার হিমেল বাতাসে, অর্পিত জীবনের আবর্তিত
পবিত্র শ্লোকে সম্মিলিত আওয়াজ আজ গভীর কণ্ঠে;
তার রক্তাক্ত শরীর বাঙলার পবিত্র শূন্যতার স্তম্ভ


দাঁড়িয়ে থাকা শত বিবেকের ব্যর্থময় অব্যক্ত প্রলাপ স্বপ্নের বেদীতে।
তোমার পদধ্বনি কোমল শিখার মতো
আঙুলে গেঁথে থাকা স্বপ্নের শিখরে স্তরেস্তরে শোভাময়
মৌলিক চেতনা আলো ও আঁধারে।
আমার সমাজ ও রাষ্ট্র চলে গেছে নির্বোধের দলে,
অর্থহীন জীবন আজ এবং আগামী দিনে,
যারা বেঁচে আছে পৃথিবীর শূন্যলোকে।
তুমি বেঁচে থাকো শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ হৃদয়ে,
সঙ্গীতের শোভায় রূপান্তরিত প্রোজ্জ্বল
বিজন অশ্রুবিন্দুর ছোঁয়ায়;
আমার রক্তিম ঠোঁটে, চোখের নিভৃতে।