শূন্য প’ড়ে আছি; হৃদয়ের সব সম্পর্ক আজ নিসর্গমালা, সজীব থাকে তার
দেবদারুর বন আর উঁচু লাল পাহাড়। রুপান্তরিত হয়েছে মানবিক যতো
সম্পর্ক, ধ্যানে আর অন্ধবিশ্বাসে, চেতনায় হারানো গভীর সংগীতের সুরে।  
পচে গেছে অতীতের সব সম্পর্ক, সবুজ আর মর্মরিত শৈশবেই; প্রজ্ঞার
                
গভীরে এসেছে মূল্যহীন আবেদন। নষ্টচেতনায় জন্ম নেওয়া করুণ প্রাথর্নার
প্রগাঢ় স্তূপে, বাঙলার সব সম্পর্ক আজ মূল্যহীন, বিষাক্ত ছোঁয়ায় সব যেনো
তীব্র গন্ধময়। দু’চোখে যেনো গেঁথে থাকে গাঢ় সন্ধ্যা আমার শূন্যমনে; গুচ্ছ
গুচ্ছ গোলাপ, গুল্ম, মৃত্তিকা, জলরাশি থেকেও অনেক অমল আমার স্বপ্নের

গলি-উপগলি। জ্যোৎস্নায় জেগে উ’ঠা নদীতল আর হিমপ্রগাঢ় নিদ্রায় স্নিগ্ধ
স্বপ্ন ধরা দেয় গভীর আত্মার মর্মে। আমার হৃদপিণ্ড আজ তীব্র সাংঘাতিক
হিংস্র গোলাপ; সবুজ অরণ্যে মিশেছে সমস্ত কামনার সুর আর সংগীতে।
টলোমলো নীল জল আমার দেহে ব’য়ে দেয় হারানো সুর, শূন্যতার চিৎকার
                
আমার দিকে দিকে প্রবাহিত তুষারে। অনাগত সব কথামালা, আমারই
শোভাময় অম্লান স্মৃতি, কোমল আলিঙ্গন সব অবিনাশী পলিমাটির গোপনে
ব’য়ে চলা উত্তাল ঢেউ। মনে মনে স্বপ্ন দেখি টলোমলো সুখ, দিকে দিকে
ঝিলিক, কুয়াশায় আজও হারিয়ে যায় বাল্যসুখে। স্বপ্ন, বিশাল শূন্যতা, মৌন
                
ঘনকাশফুল, ধীরে ধীরে কেঁপে উ’ঠে আমার স্নিগ্ধ শিশির, উষ্ণ নিঃসঙ্গতা,
ভেঙে পড়ছি, হারিয়ে যাচ্ছি গাঢ় অন্ধকারে; স্তব্ধ, স্বরহীন আমার দ্যুতিময়
ভাষা, জ্যোৎস্নায় জেগে উ’ঠে আমার সুরে, জলের হিমে। শব্দহীন আমার সব
প্রলাপ, নিরর্থক, দুষিত হৃদপিণ্ডে; বধিরতা নেমে আসে সোনা জ্বলা মৃত্তিকার
                
নীলিমায় গন্ধরাজ, আমার দিকে দিকে অমল জ্যোৎস্না, সোনালী রোদ, অজস্র
ধারায় প্রবাহিত রক্তজবা, আমার নষ্ট শরীরে গেঁথে থাকা লাল ঠোঁটে, নিবিড়
সন্ধ্যায় নিরর্থক প্রলাপ, আমারই অতীত হারানো কম্পন ভু’লে যাওয়া স্মৃতিতে;
আমার আঙুল জুড়ে গেঁথে থাকে অমল জ্যোৎস্না তার চন্দ্রমল্লিকার বনে বনে।