বাংলা কবিতা আন্তর্জাতিক কবি সম্মিলন-২০২৪ অনুষ্ঠিত হল ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখ। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এর একদিন পর ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে আগত কবি বন্ধুরা এবং বাংলাদেশের কবি বন্ধুরা মিলে কুষ্টিয়া ভ্রমনে যাব। উদ্দেশ্য লালন সাঁইজির আখড়া, রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি সহ কুষ্টিয়ার দর্শনীয় স্থান গুলো দেখা। যথারীতি ২৫ ফেব্রুয়ারি আমরা তেরো জন কুষ্টিয়া ভ্রমনের উদ্দেশ্যে রওনা হই। আমাদের দলে ভারতীয় কবি পরিতোষ ভৌমিক সহ ভারত থেকে আগত  পাঁচজন এবং বাংলাদেশের আটজন সহ মোট তেরো জন। কুষ্টিয়া ভ্রমনে মোট ষোল জন যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু ব্যক্তিগত সমস্যা জনিত কারণে কবি সেলিনা আপা সহ আরো দুইজন যেতে পারেন নি।


আমাদের বাস (রাবেয়া পরিবহন) গাবতলী থেকে সোয়া চারটায় কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্য রওনা হল। আগে থেকেই টিকেট কেটে রাখা হয়েছিল। কবি আফরিন জানিনা মিলি আপার বন্ধু সাজু ভাই টিকেট কেটে রেখেছিলেন। যার দরুন টিকেট কাটা নিয়ে আমাদের আর কোন প্রকার ঝামেলা পোহাতে হয়নি। শহর পেরিয়ে বাস টি দ্রুত গতিতে ছুটে চলছে তার আপন গন্তব্যে, রাস্তার দু’পাশের প্রকৃতি দেখতে দেখতে কখন যে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে চলে এসেছি টেরই পাইনি। তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। ফেরিতে বাস উঠার পর আমরা সবাই বাস থেকে নেমে পড়ি পদ্মা নদীর চার দিকটা একটু দেখব বলে, কিন্তু সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার কারণে পদ্মা নদীকে আর ভালোভাবে দেখা হলো না। শুধু পদ্মা নদীতে চলাচলরত বিভিন্ন বাহনের বাতি গুলো দেখা যাচ্ছিল। এখানে একটি কথা না বললেই নয়, আমাদের রন্জু ভাই এবং মিলি আপা বয়স যাই হোক না কেন মনের দিক থেকে এখনো তরুন, পুরো ভ্রমণ জুড়ে আমাদের আনন্দ দিয়ে মাতিয়ে রেখেছেন। ফেরিতে উঠে ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। প্রায় আধাঘন্টা পর আমরা দৌলদিয়া ঘাটে পৌঁছলাম এবং পুনরায় আমাদের বাস টি কুষ্টিয়ার দিকে ছুটে চলল তার আপন গতিতে। রাত প্রায় নয়টা ত্রিশ মিনিটের সময় আমাদের বাসটি কুষ্টিয়ার কুমারখালির জিলাপিতলা বাজারে এসে থামে।


এখানে ঢাকা শহরের মতো অটোরিক্সা নেই। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াতের জন্য ভ্যান গাড়িতে চড়ে যেতে হয়। ভ্যান গাড়ি দেখে আমরা একটু আশ্চর্য হই, এর আগে কখনো ভ্যান গাড়িতে চড়ে কোথাও যাওয়া হয়নি তাই ভ্যান গাড়িতে চড়তে আমাদের একটু একটু ভয় ও হচ্ছিল, আবার আমাদের মধ্যে কেউ কেউ রসিকতা করে বিভিন্ন কথাবার্তা বলতে ছিল। এক পর্যায়ে আমি পরিতোষ দা কে ডেকে বললাম, ”আরে দাদা উঠুন না এটা বোয়িং সেভেনটি নাইন”। আমার কথা শুনে পরিতোষ দা না হেসে পারলেন না। সাথে সাথে পরিতোষ দা মিলি আপাকে বললেন আরে দিদি উঠুন, বোয়িং সেভেনটি নাইন-এ উঠুন। সবাই হইহুল্লোর করে বোয়িং সেভেনটি নাইন-এ চড়ে সাজু ভাইয়ের বাড়িতে চলে যাই।


সাজু ভাইয়ের বাড়িতে এসে যা দেখলাম এটি একটি এতিম খানা। হাজী  কিয়ামত আলী বিশ্বাস ও গেদিরন নেছা এতিম খানা বালিকা পরিবার। এটি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালিতে অবস্থিত। এটা কাতার চ্যারিটির সহায়তায় পরিচালিত হয়। মিলি আপার বন্ধু আমাদের সাজু ভাই, মো: সাজ্জাদুর রহমান (এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট) লিগাল এডভাইজার, কাতার চ্যারিটি, বাংলাদেশ। তিনি কাতার চ্যারিটির ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধি হিসেবে এই এতিমখানার দায়িত্ব রত। এবং মো: আশরাফুল আলম (হীরু) তিনি এতিমখানার সভাপতি আর প্রফেসর জিল্লুর রহমান মধু সাধারন সম্পাদক। এতিমখানার পরিবেশটা এতোটাই সুন্দর আর পরিচ্ছন্ন দেখে আমরা সকলেই মুগ্ধ হয়ে যাই, যেন আমরা কোন বাগান বাড়িতে এসেছি। বাড়িটির উত্তর পাশের একতলা বিল্ডিংয়ে অতিথিশালা, পূর্ব পাশের দু’তলা বিল্ডিংয়ে আবাসিক ও দক্ষিণ পাশের দু’তলা একটি বিল্ডিংয়ের উপড়ে আবাসিক আর নিচে ডাইনিং ও স্টোর রুম, বাড়িটির মাঝখানে আম গাছের বাগান ও বিভিন্ন ফুলের গাছ দিয়ে সাজানো আর বাড়িটির সামনের দিকে বিভিন্ন প্রকার সবজির বাগান। আমরা এখানে পৌঁছে দেখলাম এতিমখানার বাচ্চা গুলো সারিবদ্ধ ভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আমাদের দেখে ওরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল এবং করতালি দিয়ে আমাদের বরণ করে নিল।
আমাদেরকে অতিথিশালায় বসতে দেওয়া হল। আমরা সকলেই ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম তখনই বিভিন্ন রকম ফল দিয়ে আমাদেরকে নাস্তা দেওয়া হল। নাস্তা করে সকলেই গোল টেবিল বৈঠকে আলাপচারিতায় মশগুল ছিলাম তখনই রাতের খাবারের জন্য ডাক আসে। রাতের খাবারের তালিকার অতিরিক্ত ছিল চিতই পিঠা আর হাঁসের মাংস। খাওয়া দাওয়া পর্ব শেষ করে সারাদিনের ক্লান্তির পর এবার ঘুমানোর পালা। শুয়ার ঘরে গিয়ে দু’তলা খাট দেখে সকলেই অবাক হয়ে যাই, এর আগে কখনোই দু’তলা খাটে শোয়া হয়নি।


ঘুম থেকে উঠেই আমরা গড়াই নদী দেখতে গেলাম। গড়াই নদীর স্বচ্ছ টলটলে জল খুবই সুন্দর দেখাচ্ছিল। গড়াই নদীর পূর্ব পাড়ের তীর ঘেঁষে বসত বাড়িগুলি অবস্থিত আর পশ্চিম পাশটায় চর পড়ে গেছে, যত দূর চোখ যায় শুধু বালি আর বালি। নদী দেখার পর গ্রামটি ঘুরে দেখার ছলে আমরা রাস্তার পাশের টং দোকানে গিয়েছিলাম চা খেতে। চায়ের দোকানে ওখানকার স্থানীয় একজন কবির সাথে আমাদের পরিচয় হল। কবি মিজানুর রহমান, তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ড এর দায়িত্বে আছেন। তিনি তার স্বরচিত কবিতা পাঠের মাধ্যমে আমাদেরকে কুষ্টিয়ায় আমন্ত্রণ জানালেন। আমাদের মিলি আপা চায়ের দোকানের দোকানি সেজে দোকানে উঠে বসলেন। তাকে দেখে চায়ের দোকানের মালিকই মনে হয়েছিল। তিনি বেশ কয়েকজন ক্রেতা কে নিজের হাতে পান ও বানিয়ে দিয়েছিলেন। অপরিচিত যে কেউ দেখে বুঝার উপায় ছিল না যে তিনি দোকানদার না। সত্যি সকাল বেলা চা খেতে গিয়ে চায়ের দোকানে আমাদের অনেক মজা হয়েছিল।


পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের ঘুরা ফেরা করার জন্য আগে থেকেই দুই টি মাইক্রোবাস রেডি করে রাখা হয়েছিল। সকালের নাস্তা করে আমরা দর্শনীয় স্থান গুলো দেখার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি। প্রথমেই আমরা লালন সাঁইজির আখড়া দেখার জন্য চলে যাই। এটি কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার ছেউড়িয়াতে অবস্থিত। এটি সাঁইজির আখড়া ছিল, এখানে প্রতি শীতকালে মহোৎসব করা হত তাঁর শিষ্যদের নিয়ে। তিনি মারা যাওয়ার পর এখানে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। যাওয়ার পথে গড়াই নদীর উপড় নির্মিত গড়াই রেল ব্রীজটিও দেখা হল, যা বৃটিশদের নির্মিত বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরানো ও দৈর্ঘ  রেল সেতু। লালন সাঁইজির আখড়ায় পৌছে প্রথমেই আমাদের চোখে পড়ে গেটের সামনে বিশাল আকৃতির সাঁইজির একতারা ভাস্কর্য। এটি ২০২০ সালের ১লা জানুয়ারি উদ্বোধন করা হয়, বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন কুষ্টিয়া, আর ভাস্কর জে, আই, মিতুল। ভাষ্কর্যটির একটু সামনেই সাঁইজির সমাধিস্থল। সমাধিস্থল টি অনেক সুন্দর কারুকার্য্যে মণ্ডিত। সমাধিস্থলের পাশেই বিশাল অডিটরিয়াম। আমরা সাঁইজির ভক্তদের কাছ থেকে লালন গীতি শুনলাম।  গান শুনে পরিতোষ দা এতোটাই আবেগ প্রবণ হয়েছিলেন যে, একতারা হাতে গানের তালে তালে শরীর দোলাতে শুরু করে দিলেন। পরিতোষ দাদা কে দেখে মিলি আপা, রন্জু ভাই সহ অনেকেই গানের তালে তালে শরীর দোলাতে লাগলেন। পরিতোষ দা একতারা হাতে নিয়ে শুধু শরীরই দোলান  নি, তিনি একটি একতারা কিনেও নিয়েছেন। পরপর কয়েকটি লালন গীতি শুনে আমরা লালন সাঁইজির আখড়া থেকে বেরিয়ে পড়ি পরবর্তী গন্তব্যে।


এবার আমরা  কাল জয়ী সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন এর বাড়িতে আসি। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক।  তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান গদ্য শিল্পী ও বাঙালি মুসলিম সাহিত্যিকদের পথিকৃৎ। কারবালা যুদ্ধকে উপজীব্য করে রচিত ”বিষাদ সিন্ধু” তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্য কর্ম।  মীর মশাররফ হোসেনের বসত বাড়ি এটি। কিন্তু বর্তমানে তাঁর বংশধরদের কেউ এখানে বসতি গড়ে নি। বর্তমানে এটি একটি স্কুল এবং মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি পাঠাগার ও অডিটোরিয়াম। অডিটোরিয়ামে মীর মশাররফ হোসেন এর ব্যবহৃত অনেক জিনিসপত্র সংরক্ষিত আছে। এরপর আমরা রওনা দিই শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি দেখার জন্যে।


কুষ্টিয়ার শিলাইদহ ইউনিয়নের খোরশেদপুর গ্রামে অবস্থিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক বাড়িটিই বর্তমানে রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি নামে পরিচিত। তখনকার সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারি পরিচালনার জন্য এ বাড়িতে আসতেন। এটি বর্তমানে রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর এই জাদুঘরে স্থান পেয়েছে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন বয়সের ছবি, ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস আর কবির আঁকা বিভিন্ন চিত্র কর্ম। এখানে এসে দূর থেকে লাল ইটের তৈরী সুরম্য প্রসাদটি দেখে আমাদের মন জুড়িয়ে যায়। কিন্তু পরক্ষণেই মনে বিষন্নতা দেখা দেয় আজ সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় বন্ধ আছে, যার দরুন ভিতরে প্রবেশ করা যাবে না। ভাগ্য আমাদের সুপ্রসন্ন ছিল হীরু ভাইয়ের আন্তরিক চেষ্টায় উপর মহলের সাথে কথা বলে, ভারতীয় বন্ধুরা সাথে থাকায় বিশেষ বিবেচনায় শুধু আমাদের টিমকে ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হল এই শর্তে  যে বেশী সময় ভিতরে থাকা যাবে না। যাক এবার আমাদের ভ্রমণ সার্থক হল সময় কম হলেও তো ভিতরে প্রবেশ করতে পেরেছি। রবীন্দ্র কুঠিরবাড়ি নিয়ে লিখবার মত যোগ্যতা আমার নেই আমি শুধু এতটুকু বলব যে রবীন্দ্র কুঠিরবাড়ি দেখে আমাদের ভ্রমণের ষোলকলা পুর্ণ্য হল। এখান থেকে ফিরে আমরা সততা রেস্টুরেন্ট-এ দুপুরের খাবার খাই। একদম ঘরোয়া পরিবেশের খাবার ছিল, সকলেই তৃপ্তি সহকারে খেয়েছি। দুপুরের খাবারের পর আমরা কাঙাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘর দেখতে যাই। কিন্তু সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় জাদু ঘরের ভিতরে প্রবেশ করা সম্ভব হয় নি। অত:পর আমরা এতিম খানায় ফিরে আসি।  


যে যার মতো আম বাগানে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল, আমি আর মোজাম্মেল ভাই আবাসিক রুমের দু’তলায় চলে যাই এমনি সময় রন্জু ভাই আমাকে ফোন করে বলল কবির ভাই নিচে আসুন আমরা এখন ইউটিউব গ্রাম দেখতে যাব। রন্জু ভাইয়ের কথা শুনে আমি তো অবাক! ইউটিউব আবার গ্রাম হয় নাকি। বিষয়টি নিয়ে কৌতূহল বেড়ে গেল আমি মোজাম্মেল ভাইকে সাথে নিয়ে জলদি নিচে নেমে আসি। রন্জু ভাইকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারি এ গ্রামের সবাই ইউটিউবে ইনকাম করে এবং ইনকামের টাকায় রান্নাবান্না করে অগণিত লোকদের কে প্রতিনিয়ত খাওয়ানো হয়, আর এই দৃশ্য গুলো ধারণ করে ইউটিউবে আপলোড করা হয়। আমি ভেবে ছিলাম যে, সেখানে গিয়ে ঐ গ্রামটি এবং গ্রামের মানুষ গুলোকে দেখব। কিন্তু না, ওখানটায় যাওয়ার পর দেখলাম ঐ গ্রামেই ইউটিউব ভিলেজ নামে একটি পার্ক আছে। পার্কের পরিবেশটা অনেক সুন্দর আর সাজানো গোছানো। এটা খোকসা উপজেলার শিমুলিয়ায় অবস্থিত। শুধু বাংলাদেশ নয় বহি:বিশ্বে ও এখন এই গ্রামটি ইউটিউব গ্রাম হিসেবে পরিচিত। ইউটিউব ভিলেজ দেখে উল্লাসিত মনে আমরা আমাদের গন্তব্যে ফিরে আসি।


রাতের আহার সেরে সকলেই আড্ডায় মিলিত হই। বিভিন্ন আলাপচারিতায় এবং স্বরচিত কবিতা পাঠে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে আমাদের আড্ডা টি। আড্ডা শেষে আমরা ঘুমাইতে চলে যাই এবং আপন গন্তব্যে ফেরার প্রস্তুতি কল্পে সবার ব্যাগ গুলো গুছিয়ে রাখি, কারণ সকালেই ঢাকার দিকে রওনা দিতে হবে। ঘুম থেকে উঠার পর সকলের চোখে মুখেই বিষাদের চিহ্ন। এতিমখানার বাচ্চারা আমাদেরকে এতোটাই আপন করে নিয়েছিল, আর হীরু ভাইয়ের কথা যদি বলি তিনি সারাক্ষণ আমাদের সাথে থেকেছেন এবং তার আতিথেয়তা সত্যি প্রসংশার দাবিদার। এতিম বাচ্চাদের ছেড়ে আসতে আমাদের কষ্ট হচ্ছিল, কিশোর দাদার চোখ দু’টি জলে টলমল করছিল।


সকাল বেলা হালুয়া দিয়ে গরম গরম লুচি খেয়ে আমরা বেরিয়ে পড়ি। জিলাপিতলা বাজারে এসে টাটকা খেজুরের রস দেখে পরিতোষ দা লোভটা আর সামলাতে পারেন নি। অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের বাস চলে আসে, রন্জু ভাই আমাদের বাসে উঠিয়ে দিয়ে তিনি খুলনার উদ্দেশ্য রওনা দেন। এবার আমাদের বাস পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় আসবে। আমার নিজের ও পদ্মা সেতু দেখা হয়নি আর ভারতীয় বন্ধুরা বার বার পদ্মা সেতু দেখার আগ্রহ প্রকাশ করছিল। যার দরুন আমরা দৌলদিয়া ঘাট হয়ে না গিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় আসলাম। কুষ্টিয়া ভ্রমণের সাথে পদ্মা সেতুটি ও আমাদের দেখা হয়ে গেল। ঢাকায় পৌঁছে মেট্ররেলে চড়ে আমার যার যার বাসায় চলে আসি আর ভারতীয় বন্ধুরা মিলি আপার বাসায় চলে যান। আমাদের ভ্রমণটি চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে স্মৃতির পাতায়।


আমরা যারা ভ্রমণের সঙ্গী ছিলাম
ভারতীয়
১। কবি পরিতোয় ভৌমিক (অমায়িক কবি)
২। কিশোর মজুমদার
৩। মিঠুন চক্রবর্তী
৪। সোমেন লস্কর
৫। মরণ ঋষি দাস
বাংলাদেশী
৬। কবি আফরিনা নাজনীন মিলি
৭। কবি জাহিদ হোসেন রন্জু
৮। কবি মুহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন
৯। মো: সাজ্জাদুর রহমান (এডেভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট)
১০। জিনাত রেহানা রনি (সহধর্মিণী সাজ্জাদুর রহমানর)
১১। সৈয়দ মোহাম্মদ আলী বাবলা (সিটি এন্ড গিল্ডস ইউকের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও আই ডিপির পরীক্ষা পরিদর্শক)
১২। শামীমা আক্তার (সহধর্মিণী সৈয়দ মোহাম্মদ আলী বাবলা)  
১৩। হুমায়ূন কবির