বিদ্যা তুমি মূল্যহীন আজ
তুমি নও আজ দীপ্ত
এ জগতে কাঙ্গাল বটে
সমাজের মাঝে তিক্ত।
তুমি বিদ্যা চাপা পরে থাক
ফাইলে বাক্সে বন্ধি
ধুলাবালি আর তেলাপোকার সাথে
তোমার জীবন সন্ধি।
তোমায় পেতে ভোরের কুয়াশায়
পেরিয়েছি পথ কত
আরামের ঘুম হারাম করেছি
রাত জেগে অবিরত।
বাবা ছুটেছে বলদ নিয়ে
লাঙ্গল চড়াতে ক্ষেতে
পায়ের তালু ফেটে গেছে তার
খালি পায়ে হেটে যেতে।
ফসলের বোঝা মাথায় নিয়ে
বাড়ি ফেরে সন্ধা বেলা
ঝড় বৃষ্টি আর ঠাটা রোদ্রে
তারই সাথে হয় খেলা।
ছেলে আমার বিদ্যান হবে
উচু হবে মাথা তার
দুবেলাতে আধা খেয়ে
কাটিয়ে নেয় সংসার।
নিজের বলতে নেই কোন জমি
পরের জমির বর্গাচাষি
বছরের পর বছর কেটে গেছে
দেখি নাই বাবার হাসি।
গায়ের জামাটা কবে কিনেছে
মনে নেই সেই কথা
শিতের রাত্রে জড়িয়ে ঘুমায়
পুরোনো লেপ ছেঁড়া কাঁথা।
মায়ের শাড়িটার সেলাইয়ের ভাজে
গেঁথে আছে কত ব্যাথা
সারাটি জীবন লেখিলে ও যাহা
শেষ হবেনা সে কথা।
যবের ছাতু ভুঁরের চাউল
খেয়েছি কত কাল
মাছ মাংস দেখিনী চোখে
জোটেছে সবজি ডাল।
মিষ্টি আলু সিদ্ধ খেয়ে
কত দিন করেছি পাড়
পেটের নাড়িভুড়ি জানে তারা
কেটেছে কত অনাহার।
ক্ষুদার জ্বালায় আঁচড়িয়ে খেয়েছি
আধা পাকা বিচি কলা
এমন অভাবে শুরু হয়েছে
জীবনের পথ চলা।
বাবা মা আজ বৃদ্ধ হয়েছে
পারেনা কিছু খেতে
পাথর বেঁধেছিল অনাহারে থেকে
এতটুকু সুখ পেতে।
অঝর ধারায় কান্না ঝরে
যখন খাই ভাল খাবার
ইচ্ছে করে আর্তনাদ করি
মনে পরে মা বাবার
আজ আমি শিক্ষিত বটে
পুথি বিদ্যা পড়ে
হৃদয়ে আমার ব্যাথার বিদ্যা
দাউদাউ করে পুড়ে।
শত কষ্টের অর্জিত সনদ আজ
পোকা মাকড়ের বাসা
এভাবেই আজ বিলীন হচ্ছে
দুখী মানুষের আশা