সন্মুখে ভয়াল ভরা পদ্মা নদী
দিতে হবে আমায় পাড়ি
জীবনের লাগি মায়া ত্যাগ করে
চলে এসেছি ঘর ছাড়ি।


গন্তব্য সে তো বহুদুরের পথ
বাইক হয়েছে সাথী
যাকে নিয়ে ছুটে চলি আমি
সকাল সন্ধ্যা রাতি।


মা বলেছে বিদায়ের কালে
যাস না নৌকায় চড়ে
ফেরী পারাপার না থাকলে
ফিরে আসবি খোকা ঘরে।


ইদের ছুটি শেষ হয়ে গেছে
থাকার নেইতো উপায়
মায়ের মন বোঝেনা কারন
কে বা তাকে বোঝায়।


ঘাটে এসে দেখি ফেরী বন্ধ
নৌকার যাত্রী সবাই
আমি ও তাদের সঙ্গী হলেম
মনকে দিয়ে অভয়।


আকাশের পানে চেয়ে দেখি
পরিষ্কার নীল আকাশ
সঙ্গে হয়েছে তারই সাথে
বুক চমকানো বাতাস।


নৌকা খানি পরিপূর্ণ হলো
শত মানুষের সমাগম
নিজের কাছে সুধাই আমি
আজ,দেখতে হবে কি যম?


নোঙ্গর ছেড়ে দিলো মাঝি
ইঞ্জিন করলো চালু
প্রবল বাতাসে নৌকা খানি
একদিকে হলো ঢালু।


ঠিকঠাক করে বসলো সবাই
কাত যেন না হয়
কেন যেন হঠাৎ করে
মনে জাগে মোর ভয়!


মাঝ নদীতে আসলে পরে
দেখি মস্ত বড় ঢেউ
আজকে বোধায় মরতে হবে
দেখবেনা আমায় কেউ।


এক শতকের উপরে আছে
বৃদ্ধ যুবক শিশু নারী
জীবনের জন্য ভয়াল নদী
দিতে হচ্ছে সবার পাড়ি।


ঢেউয়ের তালে নৌকা দোলে
এই বুঝি গেলে ডুবে
মৃত্যু বোধয় নিশ্চিত আজ
কাল, দেখবোনা সূর্য পূবে।


আমার মত সবার মুখটি
ভয়েতে হয়েছে কালো
ভাবছে আজ নিভিয়ে যাবে
জীবনের সব আলো।


তাকিয়ে দেখি মাঝি ভাইয়ের
ফ্যাকাশে বদন খানি
হাত পা সব অবশ আমার
শুকিয়ে গেছে গলার পানি।


এভাবেই চলে মিনিট বিশেক
অবশেষে পেলাম তীর
তাকিয়ে দেখি এখানেও হায়!
শত মানুষের ভীড়।


কি সাহস ওদের ভেবে পাইনা
সেথায় সব বয়সের লোক
এভাবেই চলছে জীবন যুদ্ধ
নিত্য পোহায় এ দুর্ভোগ।


ফেরী রয়েছে ঘাটেতে বাঁধা
সেখানে তেলেসমাতি
ওদের ক্ষমতা নেই মমতা
ওরা দিনকে বানায় রাতি।


কোন দিন হয়তো ব্রীজ হবে
মানুষ, স্বস্তিতে দিবে পাড়ি
আরাম আয়েশে স্বল্প সময়ে
ফিরবে আপন বাড়ি।


সেদিন হয়ত থাকবেনা কেউ
আমার মত আছে যারা
প্রার্থনা করি নদীতে ডুবে
চিরতরে না যায় হারা।