"আমি যাচ্ছি- খোদার কাছে সব বলে দিতে।"


আমার মেয়েটির চোখেমুখে তখন ঘৃণা
আমার মেয়েটির চোখেমুখে তখন অভিমান


আমি তাকে বুকে জড়িয়ে সান্ত্বনা দিলাম।
কিন্তু কিছুতেই তার অভিমান ভাঙলো না।


আমি তার কানের কাছে কালেমা পাঠ করলাম।
যাদের কেউ নেই তাদের খোদা সহায়।
যিনি পরম করুণাময় এবং অত্যন্ত দয়ালু।
বললাম- পড়ো। অন্তিম কালেমায় স্বর্গ পাওয়া যায়।


এবং সেখানে তুমি একমুহূর্তও একা থাকবে না।
সেখানে অপেক্ষায় আছেন তোমার মা
সাতদিন আগেই পৌঁছে গেছে তোমার ভাই।


সেখানে কোন যুদ্ধ নেই।
সেখানে কোন মৃত্যু নেই।
সেখানে কখনো বোমারু বিমান আসবে না।
সেখানে তুমি যথেষ্ট খাবার এবং পানীয় পাবে।


আমার মেয়েটি হয়তো বুঝতে পারছিলো
পৃথিবীতে তার আয়ু আর বেশিক্ষণ স্থায়ী নেই।
আমি আবারো তার কানের কাছে কালেমা পাঠ করলাম।
শরীরের শেষ শক্তিটুকু ব্যয় করে উচ্চারণ করলো-


"বাবা, আমি খোদার কাছে সব বলে দেবো।
যারা মানুষকে হত্যা করছে কেবল তারাই দায়ী নয়-
যারা মানুষের মৃত্যুতে বোবার মতো নীরব
তারাও আমার অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ী।
মৃত্যুর পর আমি খোদার কাছে সব বলে দেবো।"


এই বলেই আমার মেয়েটি স্বর্গের দ্বারে পা বাড়ালো।
আমি আর এখন কোন কন্যা সন্তানের পিতা নই।
একবিংশ শতাব্দীর সিভিলাইজড নাগরিক হিসাবে
মৃত মেয়েটির জন্য মৌন শোক প্রকাশ এবং
একমিনিট নীরবতা পালন করে দায়মুক্ত হলাম।


০১০৩২০১৮
কুটির।