গতদিন স্টলে আসা মেয়েটিকে দেখার জন্য
অপেক্ষার একটি বিকেল সন্ধ্যা করে বসে আছি।
আজ সে আসবে কি আসবেনা জানা নেই!


তাকে দেখেছিলাম কেমুসাসের বইমেলায়।
স্বাস্থ্যবতী, শ্যামলা বর্ণের। নাম বলেনি।
পিঠের উপর ধূসরকালো ব্যাগ ঝুলিয়ে
একজোড়া চোখ পায়ের তলায় থেঁতলে দিয়ে
দাঁড়িকমার স্টলে এসে বলেছিলো-


“এই যে শুনুন! আপনাকে কোথায় দেখেছি
কিন্তু- মনে করতে পারছি না।” কোথায় বলুন-
জিমনেশিয়াম? “হ্যাঁ হ্যাঁ, বুকহিলের বুকস্টলে।”
হয়তো হতেও পারে! একটু আগে ওখানে
মানিকবাবুর বই কিনতে গিয়েছিলাম।
“সেখানেই আপনার টিশার্টে লিখা উক্তিগুলো
পড়েছি। ভারি চমৎকার, চোখ ধাঁধানো।”


পালাক্রমে কথার ফাঁকে কথা হলো-
কোথায় পড়ি, কিসে পড়ি- লিটারেচার?
আমি বললাম- ইকোনমিকস ফোর্থ ইয়ারে।
সুযোগ পেয়ে আবার তাকে জিজ্ঞেস করি-
তুমি এবার কিসে পড়ো? মৃদু হেসে উত্তর দিলো-
“মদনমোহন কলেজ,
সায়েন্স গ্রুপ, ইন্টারমিডিয়েট সেকেন্ড ইয়ার।”


ভেবেছিলাম টেনেটুনে আরোও কিছু কথা হবে
নাহ, তা হলো না! ওর তখন ফেরার তাড়া।
আগামীকাল দেখা হবে এই আশায়-
বোকার মতো আমিও তাকে যেতে দিলাম।
কেন জানি ভুলে গিয়েছিলাম- বয়ে চলা সময়,
চলে যাওয়া নারীরা কখনো ফিরে আসেনা!


যদিও আজ মেলায় অনেক ভীড়। সে আসেনি।
আমার হাতে তেমন বেশি সময় নেই।
নিয়ম মেনে শূন্য চোখে আবছা মুখের ছবি এঁকে
রাতের বাসে মফস্বলের পথে আমাকে ফিরতে হবে।


“মদনমোহন কলেজ, ইন্টারমিডিয়েট সেকেন্ড ইয়ার।”
বইমেলা ২০১৮'র অপঠিত অচ্ছুত কবিতার বই-
আজ ফিরে গেলে যে বই আর খোলে দেখা হবে না,
সবকটি কবিতা অলিখিত থেকে যাবে লিখা হবে না।


তবুও কি আমি সেই হারানো বইয়ের শিরোনাম খুঁজবো?


২১০৩২০১৮
কেমুসাস।