একদা, এক এক ভূখণ্ডে ছিল এক এক রঙের বাস। উঁচু পাহাড় প্রাচীর হয়ে ছিল মাঝ খানে। প্রত্যেক রঙের মাঝে সেই রঙের প্রাণীরাই বাস করত। তারা জানত না সেই উঁচু পাহাড় কি করে পারি দিতে হয়। একটি রঙে মিশে একটা রঙেরই ছিল তাদের জীবন। তারা ভাবতই না অন্য কোন রঙ হতে পারে। তারা তাদের নিয়েই আনন্দে ছিল। তাদের মাঝে নারী ছিল পুরুষ ছিল। ছিল যৌন ক্রিয়ার ছত্রিশ রকম কলা। তাদের যৌন ক্রিয়ায় একই রঙের শিশুরা জন্মাত। তারা একই আলপনা আঁকত একই ফুল ফোটাত। তাদের মনে ছিল একই সুরের গান।


এক যুগে কেউ বলতে পারে না শনি, ইউরেনাস না ভেনাস এর প্রভাবে, এক রঙে কিছু শিশু জন্ম নিলো। যাদের মনে পাহাড় পারি দেবার স্বপ্ন ছিল। সেই শিশুরা যখন যুবক হল, সবাই খুব ভয় দেখালো দৈত্য, পিশাচ আর রাক্ষসের গল্প শোনাল। শোনাল সয়তান আর পাপের কথা, নরকের যন্ত্রণার কথা। কিন্তু সেই যুবকেরা ভয় পেল না ভয় কি তারা জানত না, পাহাড়ের ওপার যে তাদের টানছিল।


কোন এক সূর্য না ওঠা ভোরে সেই যুবকেরা তাদের রঙ থেকে বেরিয়ে গেল। এরপর কেউ জানত না তাদের কথা। সেই রঙের যুবকেরা হারিয়ে গিয়েছিল চিরতরে।


এরও অনেক পরে পাহাড় পেরিয়ে ফিরে এসেছিল কিছু প্রাণী। তারা সবাই কে চমকে দিয়েছিল। সবাই ভেবেছিল তারা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে। কারন, তাদের রঙ ছিল একদমই আলাদা। সেই আবির্ভূত রঙের যুবকেরা সেই হারিয়ে যাওয়া যুবকদের শেষ ইতিহাস বলেছিল।


এরপর সেই নতুন রঙের অতিথিরা তাদের পছন্দের নারীর সাথে যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত হল যারা তাদের দ্বারা আকৃষ্ট হয়েছিল। অতঃপর এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল। সেই যৌন ক্রিয়ায় যে শিশুগুলো জন্মাল তারা দেখতে তিনটি রঙের হল। দুটি হল তাদের জন্ম দাতাগণ যেমন ছিলেন, আর একটি হল একদমই আলাদা। এমনি করে আরও অনেক রঙের জন্ম নিতে থাকলো। ফলে সহসাই এক রঙের ভূখণ্ড বর্ণীল হয়ে উঠল।


ততদিনে পাহাড় পারি দেয়া শিখে গেছে সকল রঙের প্রাণীরা। সয়তান আর পাপের ভয় কেটে গেছে। অবলীলায় এক রঙ মিশে গেছে আর এক রঙে। ভূখণ্ড থেকে ভূখণ্ডে হরেক রঙ মিলে মিশে গড়ে তুলেছে বসন্ত বাগান। সেই সময়ে কোন এক মিশ্র রঙের ভূখণ্ডে জন্ম হয়েছিল আমার। দিকে দিকে তখন চলছে বর্ণ পরিচয়ের বিতর্ক। সকলেই নিজেকে বিশুদ্ধ বর্ণের অধিকারই বলছে আর দাঙ্গা বাধিয়ে দিচ্ছে। আমি তখন সবে হাসতে শিখেছি, বর্ণ পরিচয় বুঝতে শিখিনী। সেই জন্যে আমি তখন শুধুই হাসতাম...। আর এখনো হাসি...