উজুর সময়েও সিরাজ কবিয়ালের গুন গুন
শোনে নি এমন লোক এ তল্লাটে নেই
নমাজেও হয়তো অন্তর্লীন কাব্যে
দোয়া চাইতো পাঁচ ওয়াক্ত -


ছোটবেলার যত খাতা ছিল বাংলা বা অংকের
দু'চার পংক্তি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতো সর্বত্রই
আব্বা মোস্তফা কাজী পদ্যহীন লোক
কত পাতা যে তার আগুনে গেছে বা জলে
তাঁর হাতে আজ আর গুনে লাভ নেই
গরুঠ্যাঙ্গানো রহমানস্যার অংকে কাঁচা ছাত্রটাকে
আদরে কপি বলে ডাকতেন
বন্ধুমহলে কিছু কদর ছিল সিরাজের
কিছু বেমক্কা মসকরার মধ্যেও
রুমা ইয়াস্মিনের মতো বন্ধুর মনে কিছুটা শ্রদ্ধাও -


সিরাজ কবিয়াল এখন ভাটিতে দাঁড়িয়ে
ঘরামির কাজ করেও দু'একটা ডাক পেলে না গিয়ে পারে না
রাত্তিরে গাছবাতি জ্বালিয়ে কবিতা লিখে লিখে
বিয়ের যৌতুকের রংচটা তোরঙ্গটায় জায়গা নেই আর
ছেলেরা হাসে নাজমা বিবি দুঃখে কাঁদে
আর আচমকা রাগে ফেলে দিতে চাইলেও
মেয়েটাই আগলে রেখেছে আব্বার অমূল্য সম্পদ


একদিন ঝাঁড়পোঁছ করা কবিতা আর
হাজার খানেক  টাকা নিয়ে সিরাজ শহরে পৌঁছে গেল
বইমেলায় জীবনের প্রথম বই চাপাবে বলে


তারপর বাড়ি ফিরে এল
নাজমা বিবির জন্যে একটা আটপৌরে শাড়ি
ছেলেমেয়েদের জন্যে কয়েক দিস্তা কাগজ কিনে


ক'দিন পরে বইমেলায়
সিরাজ কবিয়ালের ঠোঙ্গায়
খুব বিকিয়েছিল গরমাগরম তেলেভাঁজা -