আমিই থাকব শুধু
চার দেয়ালের সুখের চাঁদিমায়,
মখমলের পাপোষ বিছানো চৌকাঠের অভ্যন্তরে আবদ্ধ অন্দরে।
লোভের বেসাতী গড়েছি সযতনে, স্বপ্ন রহীত রক্তিম চোখ জুড়ে শুধু কুলাংগার অভীলাস
কেড়ে নিতে নিজের করতলে সবুজের চাতাল, পুকুরের জল, নদীর পাড়
আমার বনেদী ভোজের মহোৎসবে সারথীর অভাব নেই
মন্ত্রী, কসাই, সাদা জামার নেতা, হাভাতের দল, ব্যাংকের দালাল, কুর্তাপরা অফিসের বড়বাবু
সবাই আছে আখের গোছাতে আমার কাছে
বেশ্যাও আছে কয়েক
যার যা লাগে সব দিতে আমি প্রস্তুত।  
আইনের নাকের ডগায় নিশান উড়িয়ে, বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে লিখিত নিয়মের খসখসে পাতায়
অমঙ্গলের চাঁদুয়া খাটাই নীরেট অসভ্য অন্তরে
কেটে সাফ করি জঞ্জাল, দাতইয়ের বন, কান্ড শোভিত পাতার হাতছানী, পাখির কিচিরমিচির
মুহূর্তে লুন্ঠিত আমার গাঁটের পয়সার কাছে
ফুঁলে ফেঁপে উঠবে তারা জীবনের বিনিময়ে।


বৃদ্ধ পিতার ঋজু দেহ, যত্নে ফেলা অযত্ন পদক্ষেপ
বহুল্য যেন একা থাকার কৌলিন্যের কাছে
মরে গেলেই বাঁচি, এ কথাই বলি মনে মনে
মনের কথা সত্য হয়ে মায়া কন্নায় ধূয়ে গেছে বধূর হাপিত্যেস
চিতায় পুড়ে গেছে অর্বাচীন সুখ।
দু'বাহু প্রসারিত স্নেহের ছায়া তাই আর নেই
চোখের সানগ্লাস সরে যেতেই দেখি
ঢেলে দিতে উদগত ক্ষোব খাড়া হয়ে সূর্য মাথার উপর।


কর্কষ কাক আর নেই
আর্মি সেলুট পরা কুচকাওয়াচের শব্দের সাথে মৃয়মান হয়ে মিলিয়ে গেছে কোন এক অন্ধকারে
ঘুম ভাঙ্গে তাই রোদের বকুনী খেয়ে
মেকী সভ্যতা দিবা নিদ্রা শেষে জেগে উঠে দেখে সময় গিয়েছে বয়ে
ঘড়ির কাঁটা নাই দাড়াঁয়ে ঠায়
মাপা দূরত্বের অভিশাপ লয়ে সে আজ বহুদূর।
সেগুন কাঠের শোভিত আসবাবে যৌবনের হাসির ফ্রেম ঘরে স্বস্থি দিতে আপারগ আজ
সয়ংক্রিয় শীতাতপ যন্ত্রে হাত যায় বার বার
সচল কিনা বুঝে নিতে নাভিশ্বাস ব্যাকুলতা
সব ঠিক ঠাক তবু কোথায় কি যেন নেই, সব আয়োজন বৃথা হয়ে আসে আমার জীবনের কাছে।


ইট কাঠের আস্তাকুঁড়ে নিমজ্জিত হারানো অতীত ভেসে উঠে নিমেষে, উলুধ্বনি শুনি আর
মুখ টিপে হাসে বিস্মৃত অরণ্য
চরম অনিয়মে উবে গেছে সবুজের ঢেউ
পাশবিক মৌনতায় আমি দেখেছি আলস্যে শুয়ে শুয়ে
উত্তপ্ত মরুর নৈকট্ট তাই আমার ন্যায্য প্রহার।