লিখতে গিয়ে থেমে যাই বারবার
প্রতিবারই থেমে যাই, থেমে যেতেই হয়!
ঠিকানা বিহীন ভাবনারা ঘুরপাক খায়
ঘুরপাক খায় ঘুরপাক খায় ঘুরপাক খায়!
সেই ঘূর্ণাবর্ত থেকেই লিখতে চাই
লিখতে চাই
অসহায় দুর্বল চিড়িয়ার আর্তচিৎকার
বেওয়ারিশ কুকুরের জীবনগাথা
ডোবায় ভেসে ওঠা ধর্ষিতার পঁচা গলা লাশই
হা সময়ের অ সময়োচিত উপাখ্যান;
আমি লিখতে চাই
বয়সের ভারে ন্যুব্জ পৃথিবীর দুঃখের ইতিহাস;
আমি লিখতে চাই
মরু সাহারায় চাতক পাখির তিয়াসী বাসনার গল্প,
আমি লিখতে চাই
কাঁটাতারে বিদ্ধ ঝুলন্ত ফেলানীর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট
আমি লিখতে চাই
ধর্মান্ধ কপটাচারী ফতোয়াবাজের নৃশংসতার বিবরণ
আমি লিখতে চাই
মানবিক অধিকার হরনকারী পিশাচের গল্প
যারা পঞ্চাশ বছরেও টিকে আছে বহালতবিয়ত।


যখনই ন্যায়ানুগ ভাবনারা জমাটবদ্ধ হয়-ঠিক তখনই, ঠিক তখনই ঠোঁটের আগায় বেয়োনেট লাগিয়ে দিলে
স্থবির হয়ে যায় সবকিছু!
আমি লিখতে পারি না,
একদম থেমে যাই!
অর্থহীন হয়ে যায় আমার বেঁচে থাকা!
অর্থহীন লাগে তামাম বিশ্ব-পৃথিবী।


তা স্বত্বেও,
লিখতে চাই
অথচ পারি না!
আমি পারি না!
সত্যিই, আমি পারি না!
কোনোমতেই পারি না!
কেননা,
আমার লেখনীতে কালি নেই!
নিঃশেষ হয়ে যায় সত্যের ধর্ম।
যেই কালি পিতার হত্যাকারীর সুরক্ষায় ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারী করেছে! যেই কালি স্বাধীনতার সূর্যকে গ্রাস করেছে একুশটি বছর -সেই কালি আজ হিংস্রধর্মী বর্মীর হাতে জিম্মি, যাদের বর্শার ফলায় লেপ্টে আছে দলা দলা কালি-
কারোর বন্দুকের নলে কালি,
কারোর পারমাণবিক বোমার কণায় কণায় কালি
অনু পরমাণুতে কালি,
পরাশক্তির বীর্যারোহণে একেকটি প্রাণঘাতী জীবাণু অস্ত্রের জন্ম-মৃত্যুতে কালি!


আমি জানি,
ঐ কসাইয়ের হাতে ধর্মান্তরিত প্রিয় লেখনী,
যার কিছুই আমার নেই,
তবুও, লিখতে চাই
আমি লিখতে চাই
তোমাদের জন্যে।