পতাকা পোড়ানো হচ্ছে,
মাড়িয়ে যাচ্ছে -
মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে!
এ কি যুদ্ধ?
নাকি মানুষের মন পুড়িয়ে রাজনৈতিক পুঁজি বানানোর খেলা?
তুমি কি দেখো না,
যারা পতাকা বানায়,
তারাই আবার পতাকা পোড়ায়—
তাদের আঁকা মানচিত্রে শুধু শিকল আর দাসত্ব।

গেরুয়া কিংবা লাল-সবুজ,
তফাতটা কোথায়?
রক্তের রঙ তো একই,
তবু একদল মন্দির ভাঙে, আরেকদল মসজিদ পোড়ায়।
তাদের হাতের সুরে বাজে বিভেদের তানপুরা,
আর আমাদের কণ্ঠে ওঠে স্লোগান—
যা আমরা বুঝি না, তবু বলি।

সংবিধানের পাতা সাদা কাগজ,
তাতে সমানাধিকার কেবল এক ছাপা শব্দ।
মাটিতে পড়ে থাকা শিশুদের খালি চোখে
সংবিধানের ‘অধিকার’ নেই।
মন্দিরের ধ্বংসাবশেষে জমে থাকে কান্না,
মসজিদের ভাঙা মেঝেতে পড়ে থাকে প্রশ্ন,
“মানুষ কি সত্যিই ঈশ্বরের সেরা সৃষ্টি?”

পতাকার নিচে তোমার জীবন,
তোমার ইচ্ছা, তোমার শ্বাসবায়ু—
সব আজ বন্ধক।
রাজনীতির আঙুলে নাচে আবেগের কুশপুত্তলিকা।
তোমার ক্রোধে জ্বলে ওঠে পতাকা,
তোমার অন্ধত্বে মাড়িয়ে দাও প্রতীক।
তোমার গায়ের ঘামে ভেজে
তাদের ব্যাংকের ব্যালেন্স।

একটি পতাকা কীভাবে এত পবিত্র,
যে তার পেছনে মানুষের বাঁচার অধিকার নষ্ট হয়?
কীভাবে এই রং, এই চিহ্ন
তোমার ঈশ্বর থেকে বড় হয়?
কেন পতাকার তলায় এক দিকের শাসন,
অন্যদিকে ভিক্ষাবৃত্তি?

আমি জানতে চাই।
পতাকা কেন আজ জবাবদিহিহীন?
পতাকার নিচে যারা দাঁড়িয়ে আছে,
তারা কি জানে যে এ রঙিন কাপড়ের ফাঁকে
আমাদের ইতিহাস কাঁদছে,
আমাদের ভবিষ্যৎ শিকলে বাঁধা?

তুমি কি আরেকবার ভাববে না?
পতাকা গোপনে কথা বলে—
তোমাকে লড়াই করতে শেখায়,
অথচ, তোমাকে দাস বানিয়ে রাখে।
মানুষের পৃথিবী আজ পতাকার পৃথিবী,
তুমি কি মুক্তি চাও না?

মুক্তির নামে পতাকা পুড়িও না, মাড়িও না।
পতাকার কাছে প্রশ্ন করো—
তুমি কি সত্যিই আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক?
নাকি তুমি কেবলই নতুন এক শৃঙ্খল?
তুমি কি আমাদের বন্ধু, নাকি শত্রু?
মানুষ কি তোমার নিচে ধুঁকে ধুঁকে মরবে,
নাকি তোমাকেই বুকে জড়িয়ে বাঁচবে?