গল্পটা উনিশ'শ একাত্তরের,
বাবার বয়সটা তখন পরিশ্রমের,
মায়ের ব্যস্ততা উনুনের বুকে,
দিদির চলাফেরা ইশকুল পথে,
আমি তখন স্বাধীন খেলার ঘরে ।


এক সন্ধ্যায় শোকের মধ্যভাগে,
পাকিস্তানীরা ঢুকে পড়লো ঘরে ঘরে,
বাবা তখনও ফিরেনি হাঁট থেকে,
দিদি তখন বই হাতে পড়ার ঘরে,
আমি তখন কাঁপছি মায়ের আশ্রয় দেয়ালে!


ওরা প্রথমে ঢুকে পড়লো দিদির ঘরে,
ভয়ার্ত কন্ঠের চিৎকার  নিভতে থাকলো একটু একটু করে,
মায়ের আকুতি স্বর থেমে গেলো গুলির আপ্যায়নে,
তারপর মিছিলের মতো চড়তে লাগলো ওরা দিদির দেহে,
আমাকেও ওরা ছুঁয়ে দেখলো আপাদমস্তকে!


হাঁট থেকে বাবা আর ফেরেনি তার পরিবারে,
মানুষের সংগ্রামে স্বাধীনতা ফিরেছে ঘরে ঘরে,
ঘুমের পিঠে লক্ষ নারী ফাঁসি বরণ করেছে আঁধার ধরে,
কেউ কেউ এতিমের খাতায় ঢুকে গেছে স্বাধীনতার ভোরে,
বীরঙ্গনারা শান্তনা পেয়েছে স্বাধীন মাটি 'বাংলাদেশ' পেয়ে!


স্বাধীনতার নামতার বয়স এখন সাতচল্লিশে,
ওরা আমাকেও ছাড়েনি একাত্তরে,
আপাদমস্তকে যখন ওরা থাবা মেরেছিলো তখন আমি সবে পাঁচে,
আমাকে ছুঁতে পারেনি কেউ আর এই বায়ান্ন'র বয়সে,
'বাংলাদেশ' বেঁচে আছে পাঁচ বছর বয়সের বাচ্চা ধর্ষণ হওয়ার ভিত্তিতে,
'বাংলাদেশ' বেঁচে থাকবে আমার দিদির রক্ত পতাকায় রেখে।