কারবালার নির্মমতা
মোঃ ইব্রাহিম হোসেন
অক্ষর বৃত্ত ছন্দঃ ৮+৬
তারিখঃ ১৮/০২/২০২২, শুক্রবার।

শিমারের হাতে খুন কারবালা প্রান্তে,
নবীজীর দু'নয়ন প্রভু সব জান্তে।
আলী ও মা ফাতিমার রত্ন হীরা মণি ,
ইমাম হোসেন তিনি ধর্ম বাত্তি খনি।

মহা জ্ঞানী সে তো জানি জান্নাতি সর্দার,
ইয়াজিদের হুকুমে গর্দান কাটে তাঁর।
রক্ততে রঞ্জিত হয় কারবালা রণ,
আকাশ বাতাস কাঁদে, কাঁদে জনগণ।

এ নিষ্ঠুর নিদারুণ কাহিনির সুর,
সেই শোকে আঁখি বারি হয়নি তা দূর।
আসলেন হুসাইন কারবালা মাঠ,
কুফাবাসীর আহ্বানে মরুভূমি ঘাট।

বাণী ছিলো মানবেই খলিফায় তাঁকে,
শত্রু পদে অধিষ্ঠিত করলো যে যাঁকে।
মার মার ঘির ঘির এই ধ্বনি সব,
হোসেনের মুখে বাণী পানা দাও রব !

গেড়ে তাঁবু সেই খানে যুদ্ধ অবিরল,
ছুঁড়ে তির মহাবীর রেখে বাহুবল।
একে একে শহীদেতে সবার মরণ ,
ইতিহাস পটে লেখা রুধির ক্ষরণ।

জয়নাল ও কাশেম বর্শা বাণে খুন,
মেহেদির রঙ মুছে সখিনার ঘুণ,
ফোরাতের তীরে বাজে কাঁদনের শোর,
পানি বিনা পিপাসায় মরণের ঘোর।

শিমারের দলবল পৌঁছে তাঁবু পাশে,
আক্রমণে রক্ষা নাই শেষ হবে নাশে।
হোসেনের আরজি এ নাহি আসে যেনো,  
মা বোন সবার আছে এই কথা মেনো।

কচি শিশু পরিবার নারী সব আছে,
যেয়ো নাগো তাঁবু পাশ প্রাণ নাহি বাঁচে।
করলো গ্রহণ বাণী হোসেনের এই,
ধীরে ধীরে প্রস্তুতিতে শির নিবে সেই।

ইমামের সাথে যুদ্ধ হয় কতক্ষণ,
পিপাসায় ঢলে পড়ে হোসেন তখন।
পানি দাও পানি চাই বুক ফেটে যায়,
নিঠুর ও পাষাণেরা ফিরে নাহি চায়।

বদনেতে করে প্রায় বাহাত্তর ঘাত,
শক্তি নাহি দেহখানে উঠাবে যে হাত।
এমন সময় এক পাথরে আঘাত,
রক্তের'ই বন্যা বয় কেউ নাই সাথ।

আবার আঘাত হানে ত্রিশুলে যে তাঁর,
বক্ষ ভেদে তির যায় কষ্ট সমাচার।
শত্রুসেনা ইয়াসর তরবারী ফির,
ছুঁড়ে মারে ভেদ করে হোসেনের শির।

রুধির ধারায় লাল নিদারুণ হাল,
নির্মমতার কাহিনী রবে চিরকাল।
মাথার পাগড়ি দিয়ে বেঁধে মাথা তাঁর,
নামাজ পড়ার তরে নত প্রভু দ্বার।

এ সময় আসরের সিজদাতে রয়,
পাষাণ শিমার মনে নাই কোনো ভয়।
লোভী মন পাবে ধন পাপী ধরে জেদ,
নামাজের হালে তাঁর করে শির ছেদ।

অস্তমিত সূর্য হলো যুদ্ধ অবসান,
ইসলাম তরে তাঁরা দিয়ে যান প্রাণ।
হার নয় জিত এই জেনে রেখো সব,
প্রাণ গেলে যায় যাক হৃদে এঁকো রব।