আমি মানুষ। আমি মানবতায় বিশ্বাস করি।
বিশ্বাস করি, প্রতিটি ধর্মের শিকড়ে রয়েছে দুইটি বাণী-
প্রথম, এক স্রষ্টার স্বীকারোক্তি;
দ্বিতীয়, সৃষ্ট জীবের প্রতি ভালোবাসা—"মানবতা"।

আমি বিশ্বাস করি ধর্মের প্রতিটি পরত,
প্রতিটি শ্লোক, প্রতিটি আয়াত, প্রতিটি মন্ত্রে।
যেখানে বলা আছে—
"তোমরা যতই পাপ করো,
যতবারই পথভ্রষ্ট হও,
আমি—তোমাদের প্রভু, ক্ষমাশীল।
ফিরে এসো, অনুগত হও,
আমি তোমাদের ভালোবেসে ক্ষমা করবো।"

কিন্তু আমরা?
আমরা তাঁর সৃষ্টি হয়ে কী করি?

আমরা প্রতিনিয়ত ঘৃণা ছড়াই,
মানুষের বিরুদ্ধে মানুষকে দাঁড় করাই।
ভাষা, বর্ণ, জাতি, ধর্ম—এসবের নামে
বিভাজনের প্রাচীর গড়ি।
কুৎসা রটাই, হিংসা ফলাই,
নিজেকে বড় করতে—অন্যকে ছোট করি।

ক্ষমা তো সেই অনেক আগেই মৃত্যু বরণ করেছে।
মানবতা আজ মুখোশ পরে জীবিত থাকার ভান করে।
তার চোখে পানি জমে,
কিন্তু কেউ দেখে না, কেউ দেখে না…

আজ রাজনীতি মানুষের বিবেক কিনে নেয়,
ক্ষমতা মানুষের ন্যায়বোধ চুষে নেয়,
আধিপত্য অহংকারে পরিণত হয়,
আভিজাত্য হয়ে ওঠে অপমানের ছুরি।
অর্থ হয়ে ওঠে সর্বশক্তিমান,
যার কাছে মানবতা গৃহপরিচারিকার মতো মাথা নিচু করে দাঁড়ায়।

মানবতা আজ পদদলিত হয়ে গোঁঙায়,
অভিযোগ করে না, শুধু প্রার্থনা করে—
“তোমরা মানুষ হও।
তোমরা আবার মানবিক হও।
তোমরা ফিরিয়ে আনো সেই হৃদয়,
যেখানে ক্ষমা ছিল, ভালোবাসা ছিল,
যেখানে মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াতো
ধর্ম, জাত, শ্রেণি নির্বিশেষে।”

ক্ষমা যেন আবার বেঁচে উঠে,
মানবতা যেন মুখোশ খুলে হাসে,
এই কামনা, এই প্রার্থনায় আজও আমি বলি—
আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিলাম…
তোমরা এবার তোমাদের সৃষ্টিকর্তার কাছে ফিরে চাও।