আজ একটি বিবৃতি মূলক চিঠি কবিতা পোষ্ট করছি আমার এক প্রিয় বন্ধু শ্রদ্ধেয় প্রনব শঙ্কর ভট্টাঃ'র অনুরোধে।বন্ধু জানিনা তোমার কেমন লাগবে।আজ 'মাধবী' বলবে তার কথা তার এক বন্ধুকে।
মাধবী আজ উচাটন মনে মনের কষ্ট বলবে স্বপ্ননীলকে।দেখো কেমন লাগে।


#আমার_বড়_মন খারাপ রে স্বপ্ননীল!
আচ্ছা বলত আমার সাথে বার বার এমন কেন হয়?
সারাটা জীবন একা একা কাটানো যে কষ্টের তুই তা বুঝবি নারে স্বপ্ননীল!


মনে নেই শিশুকাল,আদৌ কি ছিল শিশু-----কাল!
শুধু মনে পড়ে কয়লা ভাঙ্গা,
গুল দেওয়া,রেশন তোলা,
জামা-কাপড় ইস্ত্রি করতে যাওয়া।
আরও আছে স্বপ্ননীল---
বাজার করা,ভাল না খেতে পাওয়া!
আরো আরো অনেক কিছু!
আমি তখন ক্লাস টু স্বপ্ননীল,


পঞ্চম শ্রেণীতে পড়া কাউকে দেখেছিস স্বপ্ননীল
বাচ্চার এতো এতো হিসু আর পটি'র কাঁথা ধুতে?
দেখেছিস; একশ দশ বিশটা রুটির আটা মাখতে প্রতিদিন?


মন খারাপ করিস না রে স্বপ্ননীল,
গল্প যে শেষ হয়নি!
সুখ ছিলনা মনে অতটুকু মেয়ের।
মরতে চেয়েছিল বার বার,
হয়ে ওঠেনি।


তারপর তো কত--ওঠা-পড়া,আস্তে আস্তে বড় হওয়া,জীবনকে আলাদা করে বুঝতে শেখা,
মৌ-মাছিদের আনাগোনা,
নিজেকে রানী রানী মনে হতো রে স্বপ্ননীল।


ভালবাসার প্রস্তাব নাকচ করতে করতে মনচুরী হয়ে গেল কারো কাছে।
রক্ষণশীল পরিবারে চোখের দেখা ছাড়া আর একটিও কথা ছিলনা।
বেড়ে গেল তার কারনে অকারনে শিস্ দিতে দিতে রাস্তা দিয়ে চলাচল,
বৌদী ডাক দিয়ে বাড়ীতে প্রবেশ।


চোখে চোখে কথা,সুযোগে হাত একটু হাত ধরা--ব্যাস।
পাকল না,ঠাঁইনাড়া হয়ে গেলাম,তবু রইল সে।


আমি তখন ইলেভেন্।
সেখানেও মৌ-মাছিদের গুঞ্জরণ বেশী রকম।বদমায়েশী ও চুটিয়ে চলত।সে সব অনেক কথা অনেক গল্প রে স্বপ্ননীল।
গান লেখাপড়া নিয়ে আছি।


স্বাধীনতা একটু বেশী।
কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ে
ক্লাস বাঙ্ক করে সে আমি
আর বান্ধবী মাঝে সাঝে দেখা,রেস্টুরেন্ট আর সিনেমা হল এ বন্দী হত।


ভালবাসতাম খুবব তবুও
একা কাছে যাইনি,বিয়ে করব না মনকে বলা ছিল যে!


পাত্রস্থ হলাম,তবুও সে জানে না।
সম্ভব ছিল না তাকে বিয়ে করে সংসার করা।


গেলাম সেদিন ওর সাথে,
যশোর রোড ধরে অনেকটা পথ হাঁটলাম দু'জনে।
দু'জনেই কেমন চুপচাপ!
শুধু বলেছিলাম ক্ষমা কোরো!


ও বোঝেনি,বলিওনি।
বাড়ী এলাম আগু পিছু করে।
ও শুনতে পেল আমার বাড়ীর শঙ্খধ্বনি,উলুধ্বনি।
জেনে গেল ছেলে আর্শীব্বাদ করে ফিরেছে বাড়ীর লোক।


আর মুখ দেখাতে পারিনি ওকে!
বিয়েতে উপহার স্বরূপ রেখে গেল রুপোর সিঁদুর কৌটোএক কমন দিদির বাড়ীতে।
বলে গেল," বোলো দিদি ওকে,সারা জীবন ও যেন আমায় না ভোলে তাই এই বন্দোবস্ত!"


আজও ওকে ভুলিনি রে স্বপ্ননীল!
ভুলতে পারিনা,ওর সিঁদুর কৌটো ভুলতে দেয় না!
অ-নে-ক দিন বাদে দেখা হয় বাবার শ্রাদ্ধ কার্যে।
ও আর আমাদের বাড়ীর রাস্তা দিয়ে যায় না যে!


টুকিটাকি কথা হল সেদিন।
বলতে ভুলল না,"তুমি আরও বেশী সুন্দর হয়েছ"।
দেখেছিলাম ওর চোখে জল,আরও বলেছিল সিঁদুর কৌটোর কথা।
বলেছিল,"আমার আর কোনো দুঃখ নেই,আমি যে তোমার সাথেই থাকি পাগলী!(ওর ভালবাসার ডাক।)
আমার স্পর্শ তোমার সিঁথিতে,তোমায় ছুঁয়ে আছি সর্বক্ষণ! ভাল থেকো তুমি,
আমার সাত জনমের ভালবাসা!"


আমি কোনোদিন ভালছিলাম না রে স্বপ্ননীল!
ওকে বলা হয়নি তোমার ভালবাসা ভাল নেই।
তাকে কঠিনরোগে ধরেছিল


শ্বশুর বাড়ী বিতাড়িত,তোমার ভালবাসা অসহনীয় দিন-রাত কেটেছে!


আরও অনেক অনেক চোখে জল আনা ঘটনা রে স্বপ্ননীল ঘটে গেছে!
বলতে চাইনা আর!
ঈশ্বর বোধহয় এভাবেই শিক্ষা দেন।


আবার আমরা কাছাকাছি ফোনে।
বুক ঝিম ধরা কষ্ট তাড়িয়ে বেড়ায়।
আর কিছু মানব না,দেখা হলে বুকে মাথা রেখে আষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে,শীতল হব রে স্বপ্ননীল!শীতল হব!