আষাইড়া মেঘের লাহান চোখ বায়া কষ্ট পড়ে,
চৈতের রইদে মাটি পুরে, আমার পুরে কইলজা।
মেয়েগো আগোন মাসটা আইতে দিলানা!
নতুন ধানের লগে তোমারে ঘরে উঠাইবার আউস আছিলো,
নবান্ন মেলা আইলে আইজও মনডা হু হু কইরা কান্দে।
মেয়েগো বড় ব্যাথা লাগে!


আমার লগে যাইবানি? লও পলাই।
ভাটার চরে গিয়া ছন দিয়া ঘর বান্দুম,
গাঙ্গে মাছ মাইরা মায়া-পোলারে শিক্ষিত বানামু।
লও পলাই!
বাপের মুখে চুনকালি দিতা পারবানা বইলা-
ছনের আগুন দিলা আমার কইলজায়।
মেয়েগো বড় ব্যাথা লাগে!


জমির পানি বাড়লে, বর্গা চাষার অভাব বাড়ে।
তোমারে নিয়া মনের স্বাদ গুলা দিন দিন ধনী হইয়া উঠে।
নিশিত রাইতে তোমার ঘাটে নাও বাইন্দা কইছিলাম;
এইবার পাট বেইচা তোমারে নাকের ফুল কিনা দিমু।
উত্তর আসমানে মেঘের ডাক হুইনা আমারে জড়াই ধইরা কইছিলা;
নাকফুল লাগবোনা, আমার ডর লাগে, আমারে তুমি ঘরে তোল।
বইশষা কালে কাম নাই, গাঙ্গে নাও বায়া পয়সা জমাইছি, ঘরের চালে নতুন ছন দিছি।
তুমি আর ঘরে উঠলানা।
নৌকার মহাজন ডিঙ্গি নৌকায় ভাসায়া তোমারে লইয়া গেলো অচিন দেশে।
মেয়েগো বড় ব্যাথা লাগে!


গরুফেরা বিকালে ভেন্না তলায়
প্রথম যেদিন কইছিলা আমারে ভালবাস।
হেইদিন থেইকা এই মনডা তোমারে সাফ-কবলা কইরা দিছি।
হায়গো! বানের জলে ফসল ভাসলে মানুষ নিঃস্ব অয়,
আমি নিঃস্ব অইছি তোমারে হারায়া।
যাত্রার দলের গান হুইনা মানুষ চোখ ভিজায়া কান্দে,
আমার চোখ ভিজেনা, বুকের মইধ্যে গাঙ্গের জোয়ার ভাঙ্গে।
তোমার শোকে ঘর ছাড়লাম, নাও ছাড়লাম।
তোমারে আর ছাড়তে পারলাম কই।
মেয়েগো বড় ব্যাথা লাগে!