ট্রাফিকের কোলাহল ছাপিয়ে যেদিন প্রথম সে শুনলো,
যেন বহুদূর থেকে...
না না...বহুযুগের ওপার থেকে ভেসে আসা, কোনো ধোঁয়াটে, প্রাচীন ও লুপ্ত অতীতের ধনুষ্টঙ্কারধ্বনি,
খুব চেনাচেনা;
সেদিনই
একটা বেশ সম্ভাব্য চাকরীর সুযোগ হারালো সে।
কানে লেগে রইলো ধনুকের শব্দ।
কার ধনুক?
কে করে শরসন্ধান?
বুঝলোনা।
একরাশ পরাজয় বুকে নিয়েও হঠাৎ,
কেন যে তার মনে পড়লো একটা শব্দ, একটা নাম, কেমন শোনা শোনা গন্ধ,
"বিজয়"....
ধুস, কতই তো শুনেছে এই নামটা। পাতি শব্দ।  
মাল্টিপ্লেক্সে ছবি দেখছে একদিন,
মরুভূমির দৃশ্য,
হঠাৎ যেন কানে এলো নদীর কলতান।
মনে হলো যেন কোনো নদীতে সে ভেসে যাচ্ছে,
স্রোতের তালে হেলেদুলে,
কানে আসে কুলুরব ঘুমপাড়ানিয়া।
কিন্তু চারিদিকে কি অন্ধকার,
হাত পা মেলার জায়গা বড় কম।
সে কি বন্দী কোন ছোট্ট ঝাঁপিতে?
মা কোথায় তার?
কান্না পেলো।
মা! মা তো বাড়িতে! এ কোন মায়ের অভাব!
"এই, কী হলো, ঘুমোচ্ছো?"
ঘোর কাটালো বান্ধবীর ডাক।
অমনি ফিরে আসা।
চলচ্চিত্র, পপকর্ন, বান্ধবী, আইসক্রীম, কফি, আরো হ্যানাত্যানা।
শপিং মল, হ্যাং-অ্যারাউন্ড, সেল্ফি তোলো রে, ফুচকা খাওরে, ছবি পোস্টাও রে;
সাবলীল প্রেমিকের নির্ভেজাল নগরযাপন।
মনে পড়লোনা আর, অশ্বনদীর কোন বাঁকেতে  হারালো তার কোন অতীতের আগামী।
কিন্তু নিয়তির নদীতে থাকে চোরাঘূর্ণির টান।
সেই টানে সে আজ ফিরে পেলো তার হারানো কবচকুন্ডল,
যখন বিশ্বাসঘাতক, সদ্যমৃত বাল্যবন্ধুর স্ত্রী, ওরফে মাল্টিপ্লেক্সের সঙ্গিনী তার নিজের সেই একদাপ্রেমিকাকে বন্ধুপুত্রসহ জামিনে মুক্ত করিয়ে আনলো কঠিন প্রয়াসে,
ভারী মূল্যে,
আর যাই হোক, ওরা দুজনেই তো বন্ধু ছিলো তার।  
ফিরে গেলো উদ্যত অঞ্জলিক।
উঠে এলো প্রোথিত রথচক্র।


কর্ণ ফিরে এলো।