|| পরস্ত্রী ||


হে কমনীয়া যৌবনবতী, রতি
জানিয়াও তুমি পরস্ত্রী, কুমতি
করিয়াছি আলিঙ্গন কি আগ্রহে
ভাবিয়া, একদা লভিয়া বিরহে,
যা হারায়েছি, তা পাইব প্রেমে
বাহুতে অনন্বিত অঙ্গের হেমে


তাই নাটকের দৈনিক মহড়ায়
যেথা তুমি নারী, আর আমি নর
যাচিতে নিষিদ্ধ প্রেম অবিনশ্বর
অনালোকিত সেই পার্শ্ব দৃশ্যে
যেথা লইয়া তোমারে বক্ষে
(নেপথ্যে, নহেক সর্বসমক্ষে)
চাহিয়াছি মোর বুকে ভরিতে
তোমার কোমল বক্ষের স্পন্দন
অনুচ্চারিত প্রেমের অভিনন্দন


সন্ধ্যা কাটে, পূর্ণিমা হতে অমানিশি
মহড়া হয় না সমাপ্ত, মোরা আসি
তুমি আস জ্বালিয়া প্রদীপ অন্তরে
আলিঙ্গনে করিতে নির্বাপিত তারে |
এ নহে যে তুমি আমারে ভালবাস
তুমি জান, এ শুধু মোহ, সর্বনাশ
জানিয়াও, তুমি আস কোন আশে
নীহারিকা চ্যুত  নক্ষত্রের আকাশে ?


তুমি তো জানো (আমার দৃঢ় বিশ্বাস)
আমার বক্ষ করিবে তোমারে রুদ্ধশ্বাস
আমার বাহু বেষ্টনীর নাগপাশ
তোমার নম্রস্নেহ পৃষ্ঠে
খুঁজিবে কর স্পর্শে
উর্বর মৃত্তিকা
নখতলে
করিতে কর্ষণ
তুমি করিয়া অশ্রু বর্ষণ
সিঞ্চনে করিবে মম অঙ্কুর আকর্ষণ


যুগপৎ - রাখিয়া তোমার জোড়া বাহু
আমাদের দুই প্রাপ্তবয়স্ক বক্ষের মাঝ
রুখিতে নিষ্পেষিত কোমলতায় ভাঁজ
চাহিবে রচিতে কপট দুর্বার ব্যবধান
কহিবে আমারে, “ছাড়, যায় যে প্রাণ”
আমি কহিব না, “দেখ, আমি নিরুপায়,
জানিয়া, কী তোমার প্রকৃত অভিপ্রায় |”


কেন না দুই জনেই মানি, নিঃসঙ্গতায়
তুমি মোর, মাত্র এই অলীক মহড়ায়


বহুবল্লভা,
প্রকৃত জীবনে তুমি এক দুর্লভ পরস্ত্রী
এই প্রেম, সব প্রেম-অভিনয়ের মাতৃ
জানি কেহই কাহারও নয় | আসলে
বিশ্বাসী দর্শকের অভাবের দিনকালে
নাটক শুধু মহড়ার তরে এক অছিলা
সময়ের সাথে রচিত সমসাময়িক
জনান্তিক ঘনিষ্ঠতার এক ধারাবাহিক
যাহা কখনই হইবেনা প্রকাশ্যে অনুষ্ঠিত


অতএব, আমাদের এই আলিঙ্গন
বন্ধ্যা, কিন্তু নহে অবৈধ আচরণ ||


----------------------------
ইন্দ্রনীর / ০৮ জুলাই ২০১৪