আমি ছিলাম…
এক তিলক আঠালো তরল
অনন্তর জমাট বাঁধা এক মুঠো মাংস পিণ্ড


অতঃপর…
সিকি বছর পেরিয়ে, নাম না জানা
অবয়বী জীয়ন্ত সত্তা।


বিনা নোটিশে হলাম
হ্রস্ব কুঠরির নগণ্য ভাড়াটিয়া
মানবশূন্য এক পৃথিবীর বাদশা
যার কোন পাইক পেয়াদা ছিল না
কুর্ণিশ করার কোন প্রজা ছিলনা এমনকি
জুলুমবাজ সেনাপতি ছিল না।


বয়ঃক্রম গড়িয়ে জ্ঞাত হয়েছি
আমার অস্তিত্ব ছিল অক্ষিগত কিন্তু জবান ছিল নিরুদ্ধ
কান্না আমার ভাষা ছিল না
জেগে থাকা আমার কর্ম ছিল না।


জলে ভাসমান ছায়ার সাথে, ইশারায় কথা হতো
ছিলনা সুশোভিত মনোজ্ঞ পালঙ্ক
ছিল শুধু, ভাবনা হীন এক প্রশান্তির জীবন

মৌলিক সমস্যা নিয়ে কোন চিন্তা ছিল না
ছিল না কোন অফিস-আদালত
কর্মের জন্যে ছুটতে হতো না
বেতন ছাড়াই মাসের পর মাস রাজার হালে চলতো।


বাড়ির মালিক-জননী
ভয়ানক রকমের ভালো মানুষ
মাস শেষে বাড়ি ভাড়ার কোন তাগাদা ছিলনা
গ্যাস বিদ্যুৎ পানি সব কিছু ছিল হাতের নাগালে
ভুয়া বিদ্যুৎ বিলে আমার কোন দায় ছিলনা।


কুড়ি বছর পর বুঝতে পেরেছি
তিনি এক শৈলী আহমক
যার নিজের বলতে কিছু নেই
ভাড়াটিয়া র জন্যে অবারিত সব
খাবারের শরিকানা এমনকি নিজের রক্তের হিস্যা
সব কিছু বিলিয়ে শুধু নিঃস্ব হবার অভিলাষ।  


ভালোই ছিলাম মনোরম অতিথিশালায়
কিন্তু সুখ বেশি দিন স্থায়ী হলোনা আমার।


মাত্র দশমাস!!!


হঠাৎ একদিন প্রলয়ংকর তাণ্ডব
মনে হলো দশ রিকটার স্কেলে ভূমিকম্প
ললিত সিংহাসন নড়ে উঠলো
চিৎকার চেঁচামেচিতে হত বিহ্বল
প্রস্থানের প্রলয় ডঙ্কা শুনতে পেলাম
বুঝতে পারলাম উচ্ছেদের সময় প্রত্যাসন্ন


অবশেষে...
ভূমিষ্ঠ হলাম গ্রন্থিময় এই জীর্ণ পৃথিবীতে।