তোকে ছুঁবো… তোকে ছুঁবো.. তোকে ছুঁবো…
তোকে ছুঁবো সহযোগী কম্পিউটারের
কী বোর্ডের সামনে;
তোকে ছুঁবো রিডিং রুমে যখন তুই বই পড়িস্
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে;
তোকে ছুঁবো ধানের মাঠে-
হারভেস্টার চালানো চালকের আসনে;
তোকে ছুঁবো--
শূন্যের মাঝারে বানানো হাসন রাজার ঘরে;
তোকে ছুঁবো…
তোকে ছুঁবো চলন্ত গাড়ির সিটে;
তোকে ছুঁবো গালে হাত দিয়ে বসা উদাস উঠোনে;
তোকে ছুঁবো জলের উল্লাসে কাঁপা
দুরন্ত স্পীড বোটে;
তোকে ছুঁবো বলাকার পাখায় কাঁপা
অন্তরিক্ষবাসীর নীল সোফাসেটে;


তোকে ছুঁবো তোর দ্বিধাগ্রস্ততায়;
তোকে ছুঁবো তোর সাহসে;
তোকে ছুঁবো তোর বেদনায়;
তোকে ছুঁবো তোর পুলকে;
তোকে ছুঁবো তোর সক্রিয় ঔদাস্যে;
তোকে ছুঁবো তোর অসংজ্ঞায়িত অন্যমনস্কতায়।


তোকে ছুঁতে চাই যেভাবে বাতাস ছুঁয়ে যায়--
সুবেহ-সাদিকের জানালা;
তোকে ছুঁতে চাই যেভাবে পদ্মা অতিথি ভবনের
কড়াইগাছের কোকিল
কুহু কুহু ডাকে ছুঁয়ে ফেলে
আমার ঘুমের অসমাপ্ত উপসংহার;
তোকে ছুঁতে চাই
যেভাবে ঘুমভাঙা গাছের পাতা
ছুঁয়ে ফেলে--
সকালের প্রাণপরায়ণ রোদ;
তোকে ছুঁতে চায় যেমন করে-
মাহমুদের অন্ত্যমিলহীন কবিতা
ছুঁয়ে ফেলে ছন্দের শরীর;


তোকে ছুঁবো.…
তোকে ছুঁবো তোর নিবিড় ভাবনায়;
তোকে ছুঁবো তোর রোমান্টিক চাহনিতে;
তোকে ছুঁবো তোর আধুনিক উচ্চারণে;
তোকে ছুঁবো তোর উত্তরাধুনিক ইঙ্গিতে;
তোকে ছুঁবো তোর অমূল্যায়িত নীরবতায়।


তোকে ছুঁবো তোর অফিসের অবসরে;
যখন তুই পিছিয়ে থাকা মানুষের
উন্নতির উপায় নিয়ে ভাবিস্ হেলান দিয়ে বালিশে;
তোকে ছুঁবো তোর বইপড়ার মাঝপথে--
যখন তুই আইনস্টাইনের মন নিয়ে
মেপে দেখিস--
কোনো তামাটে বিশ্বাসের ভিত্তি;
তোকে ছুঁবো তোর সঙ্গোপন প্রহরে
যখন তুই প্রেমকে জেতানোর পথ খুঁজিস্
নিপাতনে সিদ্ধির একলা পথে।


তোকে ছুঁয়ে দেখবো যেভাবে ঠাকুরের গীতাঞ্জলি
ছুঁয়ে এসেছে নোবেল প্রাইজের ঠিকানা;
তোকে ছুঁয়ে দেখবো যেভাবে বেগম রোকেয়ার
ভাবনারা ছুঁয়ে আছে নারীস্বাধীনতার কেন্দ্র;
তোকে ছুঁয়ে দেখবো যেভাবে বিদ্রোহী কবির
সাম্যবাদী সৃষ্টি ছুঁয়ে আছে মহামিলনের চূড়া;
তোকে ছুঁয়ে দেখবো যেভাবে বঙ্গবন্ধুর
সাতই মার্চের আঙুল ছুঁয়েছিল
ষোলই ডিসেম্বরের লালসবুজের সূর্য।


তোকে ছুঁবো…
তোকে ছুঁবো অভিজ্ঞ সোফাসেটে--
অধরে অধর ভিড়িয়ে মুখোমুখি;
তোকে ছুঁবো পা বাড়িয়ে
একটুখানি খাল পেরুনো নৈকট্যে;
তোকে ছুঁবো অঙ্গবিহীন আলিঙ্গনে--
অন্তরে অন্তর দিয়ে ট্রেন ফেল করা দূরত্বে;


তোকে ছুঁবো যেভাবে ভালোবাসি শব্দটি ছুঁয়ে ফেলে
অনুরাগের সবটুকু ব্যঞ্জনা;
তোকে ছুঁবো যেভাবে বিসমিল্লার সানাই ছুঁয়ে ফেলে
গভীর এবাদতের ভাষা;
তোকে ছুঁবো যেভাবে কাজীর অনুবাদ ছুঁয়ে আছে
রুবাইয়াতের সবখানি ওমর খৈয়াম;
তোকে ছুঁবো যেমন ঘূর্ণায়মান দরবেশের মসনবী
ছুঁয়ে ফেলেছে সম্পর্কের সর্বশেষ সীমা;


তোকে ছুঁবো!
তোকে ছুঁবো!
তোকে ছুঁবোই!