আমি এই গাঁয়েতে থাকবো না,
মেঠো পথের মলিন কাদা স্বর্ন অঙ্গে মাখবো না।
সবুজ ঘাসের জমানো শিশির,
মম ঠোটে মাখবো না।
আমি এই পল্লীতে থাকবো না।
শিশির ভেজা দূর্বাঘাসের গন্ধ আমি পাবো না।
কলমি তলার হাঁসের হাসি,
আমার কানে বাজবে না।
তেপান্তরে ক্যানভাস বা পূর্বাচলের ঊষার আলো দেখবো।
বয়স বেশি বুড়ো দাদুর লাঠি খেলা দেখবো না।
নদীর বুকের জল ছলছল,
আনন্দে আর ভাসবো না।
আমি এই পারাতে থাকবো না।
সরল সোজা মাছুম মানুষ,
দু নয়নে দেখবো না।
কংশ মাঝির ছাতি ফাটা রৌদ্রে নৌ দেখবো না।
আমি এই গ্রামে থাকবো না।
বিয়ের বয়স হয় নি যাদের,
তাদের শাশুড়ি ডাক শুনবো না।
মেয়ে বেচা ঐ মায়েদের আনন্দ আর দেখবো না।
থুরথুরে সেই বুড়ির কাশি,
দিবা রাত্রি শুনবো না।
হাড্ডিসার এক রুক্ষ ছেলের,
বাদাম ফেরী দেখবো না।
যৌবন যার শেষ হয় নি,
তার দ্বিতীয় বিয়ে দেখবো না।
আমি এই মাটিতেই থাকবো না।
দোলনচাঁপার গন্ধে কবি,
আর কবিতা লিখবে না।
মক্তবের সেই প্রাতের ধ্বনিই,
সকাল শুরু হবে না।
ঘাঘট পাড়ের ছোকরা ছেলের,
ধপধপানি দেখবো না।
কংশ নদীর বুক ফাটা পাক,
দৃষ্টি গোচর হবে না।
আমি এই ভূমিতে থাকবো না।।
ফকির বাবুর দ্বারেদ্বারে ভিক্ষার গান শুনবো না।
নগেন বাবুও এক বিছানায়,
স্ব পরিবারে থাকবে না।
জাকাত নেওয়ার সময় যাদের,
মসজিদে দান দেখবো না।
রাত্রি হলে খ্যাক শিয়ালের হোয়া হোয়া শুনবো না।
চাঁদনী রাতে চাঁদের সাথে,
একটি কথাও কইবো না।
আমি এই পল্লীতে থাকবো না।
গরীব দুঃখীর দাদোন নিয়ে,
জমি খোয়া দেখবো না।
ভূস্বামী আর ভূপতিদের,
আধিপত্য দেখবো না।
মসজিদের ঐ ছিন্নি রুটির,
ভাগ বাটি দেখবো না।
কৃঞ্চ আর হুসাইনের,
বন্ধন আর দেখবো না।


আমি এই পল্লীতে থাকবো না।।


উৎসর্গঃ সুখদেবপুর, মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা