আষাঢ় -শ্রাবনে সাঁঝের বর্ষন দেখে আজও অশ্রু ঝরে-
বৃষ্টির প্রতি ফোটায় ভেসে উঠে-
সেই করুন মায়াবী,বিমুগ্ধ,ম্লান মুখচ্ছবি।
কল্পনায় ভাসতে থাকি-
সেই না বলা ভালবাসার অম্ল- মধুর অভিমানে।


কত ছলা-কলায় অনেকটা জোর করেই ডেকে নিয়ে গিয়েছিলি তোর ঘরে।


লজ্জায়, অপমানে আর-
সুদীর্ঘ আটটি মাসের লালিত কষ্টে,
যেতেই চাইনি আমি।
তার চেয়েও বড় অন্তরায় ছিল-
না বলা ভালবাসার অভিমান।


তুই মুখোমুখি বসেছিলি আমার-
বাইরে তখন প্রচন্ড বর্ষন শুরু হয়েছিল।  
দীর্ঘসময় দু'জন নিস্তব্ধ-নিথর।
অভিমানগুলো সুপ্ত আগ্নেয়গিরির ন্যায়-
জ্বলে উঠছিল তৃষ্ণার্ত হৃদয়ে।
সেই চাঁদ মুখটা মাথা তুলে দেখার
সাহস হচ্ছিল না আমার।


দু'চোখের বর্ষনে সেদিন ঘরের মেঝে হয়তো কর্দমাক্ত হয়েছিলো।
তুই ও কাঁদছিলি অপরাধবোধের চাপা কান্না।


দীর্ঘ আটমাস একটিবারের জন্যও
আমাদের মাঝে কোন কথাই হয়নি।
হাজারো বার অনুভবে,কল্পনায় দেখতাম তোকে।


বারবার কত প্রশ্ন করে
তুই ভাঙিয়েছিলি আমার অভিমান।


হঠাৎ বলে উঠলাম,
অনেক পাল্টে গেছিস তুই;
আগের চেয়ে অনেক বেশি সুন্দর লাগছে তোকে;
চোখ ফিরাতে পারছিনা।
আমার অপরাধ কি এত বেশি ছিলো?
আমাকে দেখার মত সামান্য ইচ্ছে তোর জাগেনি?
অথচ একই ক্লাসে একই ব্যাচে,
পাশাপাশি বেঞ্চিতে বসতাম আমরা-
জলভরা চোখে বলেছিলি তুই।


কি উত্তর দিয়েছিলাম মনে পড়ছেনা।
আসলে সবই ছিলো আমার অভিমান,
আরো বেশি পাওয়ার অভিমান-
ঠিক যতটা ভালবাসতাম তোকে।


অতঃপর সম্পর্কটা আরো মধুর হলো আমাদের।
অথচ বলা হয়ে উঠেনি-
টানা মাধ্যমিক জীবনের লালিত শব্দটি।


হয়তো স্কুল জীবনের কাছেই বলি হয়ে গিয়েছিলো- চারটি অক্ষরের দুঃসাহসিক উচ্চারণ।
সেদিন খুব ইচ্ছে করেছিল তোর হাতে হাত রাখতে,
রঙিন জূতোয় আটা ফর্সা পায়ে সুড়সুড়ি দিতে।
আমি পারিনি!


তারপর কত কথা হলো দুজনার মধ্যে-
অসংখ্য দিন রাত্রির জমানো কথা,
অভিমান আর ইচ্ছের কথা।
শেষ হয়েও আর হয়ে উঠেনা যেন।


তবু বলা হয়নি বুকের ভিতরে পাহাড়সম ভারি ছোট্ট একটা শব্দ-
শুধু তোর কাছে শুনবো বলে।


আজ এই বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায়-
জলের উপর লিখে দিলাম চিঠি-
এখনো অনেক ভালবাসি তোকে।
আজও ভুলতে পারিনি,
তোর গায়ের পারফিউমের গন্ধ,
চঞ্চল, হাস্যোজ্জ্বল দুটি চোখ;
সেই মায়াবী ম্লান মুখ  
যার মায়ায় জয় করতে পারতাম হাজারো অপমান আর নিন্দার দংশন।


জানি,আমাদের সম্পর্কটাএখন
সংকট কোণে দাড়িয়েছে।
তবুও আশা নিয়ে বেঁচে থাকা
এই নিঃসঙ্গ ব্যর্থ প্রেমিকের।


পূর্ণ-অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন নয়;
বাদলের জলে নিত্য লেখা চিঠির-
প্রতিটি শব্দের প্রতিসরন তোর মনে,
একদিন হবেই হবে-
  
হয়তো তোর জীবনের কোন এক
একাকী-ব্যাকুল শ্রাবণ সন্ধ্যায়।


এ আমার অকৃত্রিম,নিষ্পাপ প্রেমের সুদৃঢ় বিশ্বাস।


তারিখঃ২৩/০৭/২০১৮(সন্ধ্যা )