মার্চের সূর্যটা ঠিক উঠি উঠি
একদল সৈনিক সারিবদ্ধ কালো পিঁপড়ার মত ব্যারাক থেকে বেরিয়ে আসে,
বিন্যস্ত বুটের তালে তালে মাটির বুকে যেন ঠেসে ঠেসে পায়ের স্কেল মিলাচ্ছে-
জি-জার্প,  সি- মাইনর
এক দুই- লেফট রাইট।


সৈন্যদলটির দিকে বাজপাখির মত তাকালে কিছুটা হৃদস্পন্দনের মাত্রা টের পাওয়া যায়
চলুন চোখের সম্পূর্ণ মনোযোগ মাত্র একজন সিপাহীর দিকে দেই,
দূর থেকে দেখেছি বলে পিঁপড়ার দল মনে হলেও
হাতের স্পর্শে আসতেই দেখা গেল
ওমা! সেও এক জলজ্যান্ত মানুষ!  
আসুন তাকে আমরা একটি সংখ্যাবাচক নাম দেই-
আজ থেকে তার নাম হলো, সোলজার ২৩৬৪।  


পুরোটা সকাল সে চক্কর দিয়েছে বালির মাঠে-
ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত।
মুখ ফসকে বলে ফেলা যায়- আহা বেচারা!  
দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে পায়ে জল জমে গেলে
ভারসাম্য রক্ষার নামে কাঁধে তুলে দেয়া হয় সার্ভিস রাইফেল।
আঙুল ব্যথা হয়ে গেলে তর্জনী আর মধ্যমার মধ্যে কাঠপেন্সিল রেখে মড়মড় করে ভেঙে ফেলা হয় ফ্যালানজেলাস!  
এর চেয়ে ব্যথানাশক আর নেই।


সৈনিকের গায়ে লেপ্টে থাকা জলপাই রঙের ঘামে ভেজা কুর্তা দেখে
একবার এক মায়াময়ী ডেকে বলেছিল-
"পাঁজরের মাপটা দিলে বুনে দিতে পারি এক রঙা জামা"।
সৈনিকের হয়ত পাঁজরের প্রতিরক্ষার চেয়ে পা'য়ের দগদগে ঘা শুকানোটাই বেশি দরকার ছিল৷
আলতো রমনীর ভালোবাসা সব সময় সিধে বুকে গিয়ে বিঁধে,
হাত - পা - স্কন্ধদেশ - গ্রীবা হাঁটু-
এসব যেন বেশ দুর্গম, ভালোবাসা পাড়ি দিতে পারে না,
তারচেয়ে সৈনিকের পেটা বুকই যেন সহজলভ্য।


আমাদের দৃষ্টি ক্ষমতা চলুন এবার একটু বাড়িয়ে নেই-
কিছুটা দূরদর্শী হই;
দূরে তাকাই ---
অনেক দূরে --
যতদূরে যাওয়া গেলে ঝাপসা হয়ে আসে চোখ;
ততদূরে তাকিয়ে দেখি সৈনিকের জীবন, নাবিকের জীবন
ঠিক যতদূর দেখা যায় ঝাপসা চোখে চেয়ে দেখি অগণিত জীবন,
দৃষ্টি সীমানার বাইরে না হয় সংখ্যা গুণব;
সোলজার ১, সোলজার ২, ------- সোলজার ২৩৬৪!