কবিতা :-গ্রামের বর্ষাকাল
✍️ মনোজ ভৌমিক


সকাল-বিকাল-সন্ধ্যা শূন্য পরিণাম,
গ্রীষ্মের খর দহনে তপ্ত ধরাধাম।
নদীবুকে নেই জল শুধু হাহাকার,
বিবস বিষন্ন দিন বৃক্ষ নির্বিকার।
প্রত্যাশায় দেখে সবে আকাশের পানে,
ধোঁয়া মাখা মেঘ সাজে সুনীল গগনে।
গ্রীষ্ম অবসান পরে আসে বর্ষাকাল,
প্রকৃতির বুকে জাগে আশার সকাল।
আষাঢ় শ্রাবণ দিন দুই মাস ধরে,
অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামে ধরা'পরে।
আষাঢ়ে মেঘের ঘটা গুরু গুরু  ধ্বনি,
বিজলী ঝলকি ওঠে বজ্রপাত শুনি।
অতৃপ্ত ধরার বুকে অমৃত সিঞ্চন,
আকুলি বিকুলি করে কৃষানীর মন।
একহাঁটু কাদাজলে ধান বোনে চাষী,
মাঠে মাঠে কোলাহল আনন্দেতে ভাসি।
ফুটিছে কদম ফুল কেতকী-কামিনী,
চাতকীর মনে ভাসে মধুর যামিনী।
পেখম তুলিয়া নাচে বনের ময়ূর,
"কেকা" রব ব্যপ্ত হয় দূর বহুদূর ।
গাছেরা সজীব এই বরষার জলে,
জিওল মাছেরা সব উঠানেতে খেলে।
একটানা ব্যাঙ ডাকে গ্যাঙ্ গ্যাঙ্ গ্যাঙ্ ,
কোলাব্যাঙে লাফ দিয়ে ভাঙে বুঝি ঠ্যাঙ্ ।
বড় মনোরম এই বরষার গান,
কবিরা কবিতা লেখে দিয়ে মন প্রাণ।
অবিরাম বরষায় নদী যায় ভরে,
মাঝিভাই দেয় ডাক, কে যাবি ওপারে?
ভাটিয়ালি ভাদুগান সময়-পরব,
বর্ষা-মঙ্গল গীত হয় হেথা সরব।
মজা নদী ফুলে ওঠে ভাঙে নদীবাঁধ,
ঘরবাড়ি ভেসে যায় ডুবে মন-সাধ।
বাঁচার তাগিদে খোঁজে নিরাপদ স্থল,
সরকারী অনুদানে প্রাণে জাগে বল।
ক্ষয় ক্ষতি যত হোক চাই যে বরষা,
ধ্বংসের মাঝে রয় সৃষ্টির প্রত্যাশা।