কবিতাঃ- মমতাময়ী মা
✍️ মনোজ ভৌমিক


জানো মা,আমি এখন আর কাঁদি না!
আর কাঁদলেও কেউ দেখতে বা শুনতে পায় না!!
কিন্তু তুমি ঠিক অনুভব করতে পারো!
একেই বুঝি বলে নাড়ির টান!!
সেদিনও যখন আমি তোমার গর্ভের অন্ধকারে
আলো দেখার প্রতীক্ষায় ছিলাম,
তুমি বলেছিলে আমাকে নাকি ভীষণ অনুভব করতে!
আমি হাসলে,খেললে তুমি বুঝতে পারতে,
আমি কাঁদলে তোমার মন কেঁদে উঠতো!!
ওদিন যখন আমাকে প্রথম পৃথিবীর আলো দেখালে...
সেদিন খুব চিৎকার করে কেঁদেছিলাম!
জানি না,সেটা খুশির না নিরানন্দের!!
তবে সেই থেকেই কান্নার শুরু....
হামাগুড়ি দেওয়া থেকে উঠে দাঁড়ানোর কান্না!
পিঠে বই নিয়ে স্কুলে দৌড়ানোর কান্না!!
সন্ধ্যায় গৃহ শিক্ষকের কাছে দাঠাকুরের তর্জনী তোলায় কান্না!
কৈশোরে অদ্ভুত সুন্দরতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ব্যথিত হওয়ার কান্না!!
তারুণ্যে সবকিছু দুমড়ে মুচড়ে  নিজকে প্রতিষ্ঠিত না করতে পারার কান্না!
প্রেমের কাছে প্রতিহত হওয়ার কান্না!!
যৌবন ছিল বড়ই দুর্বিসহ ...
এম্প্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্চ ও দপ্তরে দপ্তরে ধারণা দিয়ে ব্যর্থতার কান্না!
তারপর ঐ সংসার নামের কলুর ঘানিতে পিষতে পিষতে
দু'চোখের সমস্ত জল যেন শুকিয়ে গেছে...
মা,আজ যখন তুমি ঝুঁকে ঝুঁকে তুলসী গাছের গড়ায়
জল ঢেলে,ব্যলকোনির ঐ মানিপ্লান্টায় জল দাও
তখন আমি বুঝতে পারি তোমার চিরায়ত মন বাসনা।
জানো মা, তোমার অকৃত্রিম স্নেহে তুলসী সবুজ সতেজ হলেও
মাণিপ্লানটা আজও বিবর্ণ রয়ে গেল মা!
শুধু এই আশ্বাসে আর কাঁদি না, সাথে আছে মমতাময়ী মা...