কবিতাঃ- তোকে হারানোর দিন
✍️ মনোজ ভৌমিক


শীত হেঁটে যায় মুচকি হেসে
বসন্ত দেয় দোলা,
বিষাদ ছোঁয়া শৈত্য বাতাস
আঙিনায় করে খেলা।

মনের ঘরে উঁকি দিয়ে যায়
আমার হারানো দিন,
শৈশব থেকে কৈশোর ক্ষণ
ছিল বড়ই রঙিন।


হারিয়ে গেছে একান্ন ঘর
হারিয়ে গেছে সে হৈচৈ,
স্কুল পালানো বোস বাগান
এ মনেতে ভাজছে খৈ।


বৌ-বসন্ত, চূঁ- কিত্ কিত্
কুক লুকানো খেলা,
দাঠাকুরের মেঘ-গর্জন,
কোথায় সাঁঝের বেলা?


পড়তে বসার সময় হলো
খেলা এখনো কিসের?
মনের ঘরে বাজতো বাঁশি
ভাবনা হতো বিষের!


অজুহাতি মন খুঁজতো যেথা
ঠাম্মার আদর কোল,
ভাই বোনেরা করতো শুরু
ভীষণ হট্টগোল।


খাওয়ার জন্য শুরু হতো
কী ভীষণ জারিজুরি!
আধঘুমো চোখ বলতো হেসে,
শৈশব হবে না চুরি।


কৈশোর ক্ষণের সেই স্মৃতি
যায় না তো ভাই ভোলা,
সাদা শাড়ির লাল পাড়তে
সেজেছিলে সেই বেলা!


খোঁপার 'পরে হলুদ গাঁদা
নাকছাবি,সীতাদুল,
গলায় ছিল সাতনরী হার
চিনতে করেছি ভুল।


অবাক চোখে ভাবনা ছিল
নতুন ছবি আঁকার,
পুতুল বিয়ের ছবিটাকে
তোর চোখেতে দেখার।


চোখের ভাষায় উঠলো জেগে
প্রথম কদম ফুল,
লজ্জারাঙা মুখের থেকে
ঝরলো মন বকুল।


বর্ষা আকাশ হারিয়ে যেত
তোর মেঘবরণ চুলে,
শরৎ আলোয় লাল দোপাটি
শরীরে উঠতো জ্বলে!


যৌবন নদে জোয়ার এলো
প্রেম হলো কানাকানি,
বিভেদকারী শক্তি এসেই
ভাঙলো মন দুখানি।

বিরহানলে জ্বালিয়ে হিয়া
তুই হলি কারো রাণী,
যাবার বেলা বললি শুধু,
নই আমি অভিমানী।


সজল আঁখি বোঝালো ওদিন
নারী হৃদয় কঠিন,
স্মৃতির পাতায় আজো জাগে
তোকে হারানোর দিন।