সারোয়ার সেই ছেলে, যে পিছনের বেঞ্চে বসে পিঠে খোঁচা দিত প্রায়ই
বিনা কারণে ডেকে নিয়ে যেত ক্লাসের বাইরে
বলতো, এতো ক্লাস করে কি হবে? ইসলাম সাব তো মরে গেছে-
স্কুলঘরের পিছনের কৃ্ষ্ণচূড়া গাছকে সাক্ষী রেখে বলতো প্রতিদিন একই কথা
লীলা তোকে কিছু বলেছে? ও তো বার বার তোর দিকেই তাকায়
তোর কি ভাগ্যরে শালা! দেখিস আমিও একদিন ক্লাসে ফার্স্ট হবো;  
আর জানিসতো আমি গলা সাধছি আজকাল
ওকে ডেকে একটা ফাটাফাটি গান শুনিয়ে দেব’খন
তুই বাড়াবাড়ি করিসনে রিমান -  
ডাব খাবি? চল তোকে ডাব খাইয়ে নিয়ে আসি-
যেই কথা যেই কাজ, হাঁটা দিল এক মাইল
হেঁটে হেঁটে চলে এলো 'গুতাইল'…
হেড স্যারের পুকুর পাড়, আকাশছোঁয়া নারকেল গাছ
থোকা থোকা ঝুলে আছে কঁচি আর ঝুনো
পায়ে দড়ি বেঁধে ঝটপট উঠে গেল টুটুল;  
টুটুল কেন বলার আগেই গাছে উঠে তা
সারোয়ার জানে না, জানে তার ছোট বোন মিতুল -
এমনি করে চলছিল এই সব দিন রাত্রি
অতঃপর পরীক্ষা এলে সারোয়ার ফেল করে হাসে,
টুটুল চলে যায় বিদেশে
রিমান পাশ করেও কেঁদে কেটে একসার -  
এমনি করে হারিয়ে যাই আমরা ক'জন দূরে ও সুদূরে ...
এরপরও দেখা হতো কোন কোন ঈদে ও পার্বনে-
এক অমাবস্যার তিথিতে হঠাৎ ফোন এলো, সারোয়ার আর নেই-
হার্ট এটাক হয়ে চলে গেল সবার আগেই!  
আরও কিছু জল গড়ালো ধনু নদীর বাঁকে ।
সেদিন কার মুখ দেখে ঘুম ভেঙ্গেছিল জানি না
কর্ণকুহর ভেদ করে খবর এলো, রিমান মারা গেছে বাইক একসিডেন্টে ।
অতঃপর টুটুল আর বেশিদিন টিকেনি ......


আজো রাত নামে, সূর্য জাগ, ফুটে ফুল
আমি একা চেয়ে থাকি পথপানে
আর কত একা একা পথচলা!
শুন হে ভোরের বাতাস, আমিও যাব চলে এক আশ্বিনে,
বলো তার কানে কানে ......