হঠাৎ চোখ খুলেই দেখি দীর্ঘ সবুজের ঢেউ,
সরু একটা ঘাসের রাস্তার রেখা বয়ে যাচ্ছে,
তার মাঝখানে অগোছালো শাড়ি পড়ে দাড়িয়ে আছে কৃষ্ণবর্ণা কিশোরী।
শাড়ির আঁচল মেলে পরেছে সবুজের গায়।
আচমকা উল্টো ফিরে দৌড় দেয় সে,
শরীরের স্রোতে একপাশ দিয়ে নেমে পড়ে শাড়ির গিঁট।
আলতা রাঙা পাগুলোকে সবুজের মেঝেতে রক্তের দেবীর পা মনে হয়।
কত বিচিত্র মোহের সবুজ,
গাঢ় সবুজ, হালকা সবুজ, রোদে পোড়া সবুজ।
মাঝে মাঝে লাল শাক বা অন্য কোন ফসলের বৈচিত্র্য চোখে আকাংখা জাগায়।
আমিও যদি কোন রঙ হতে পারতাম!
কিশোরীর পায়ের দাগ হয়তো আমার বুকে লেগে থাকতো!


সবুজের সমুদ্রে আইল্যান্ডের মতো গাছে ঘেরা একটি বাড়ি, পুকুর, উঠোন।
সেখানে প্রবেশের মুখে আম গাছটির ডালে একটি দোলনা বাঁধা।
কিশোরীটি দোলনায় দোল খাচ্ছে, মাথাটি তার উল্টো করে রাখা।
চুল গুলো দুল খেয়ে ফিরে আসার সময় প্রায় মাটি ছুঁয়ে যাচ্ছে।
লাঠিতে ভর দিয়ে দাওয়ায় বসে থাকা বৃদ্ধাটি হাসছে আর বয়সের সাক্ষী বলিরেখার ভাজে অশ্রু জমা পড়ছে।
অনেক অনেক বছর আগে ভুলে যাওয়া ঠিকানায় এমন চুলের খেলা তারও ছিলো।


পরিষ্কার আকাশে যখন হঠাৎ অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি হয় তখন কোন প্রাণী-ই বোধহয় বিচলিত হয় না।
দোল খাওয়া কিশোরীটিও বিচলিত হলো না।
বরং খিলখিল করে হেসে দিলো।
তার হাসি হাওয়ার সাথে মিশে চলে গেলো শাপলার কাছে।
ফুটে উঠলো কিছু শাপলা, বিচলিত হলো ব্যাঙ।
প্রত্যেক গাছের পাতায় প্রতিধ্বনি হলো।
কিছু আসলো আমার বুকে,
কথোপকথন হলো ভেতরের গ্রাম্য মানুষটার সাথে।
হতাশ হলো, ফিরে গেলো সবুজ।
ফিরে এলো অন্ধকার।


#জামশেদ
#রোমেল
১৮আশ্বিন, ১৪২৫ বাংলা