এইমাত্র-
একটা প্লাস্টিক বোতল রঙ করলাম—  


ফ্লাওয়ার পট বানাবো—
ধবধবে সাদা, যাকে বলে একেবারে দুধ সাদা;  
তাকিয়ে দেখতে দেখতে কেমন যেন
রোম খাড়া হয়ে উঠল- এতো সাদা!  
না না ভয় করছে, এমন ফটফটে সাদা
এ তো মৃত মানুষের হয়—  


না না—
লাল, লাল রঙ করব, টুকটুকে লাল—
আঃ কি আরাম, কি উজ্জ্বল—  
কি অপার্থিব উজ্জ্বল লাল!
ভাল লাগতে লাগতে কেমন যেন
ঝিম ধরে এলো, এতো লাল! এতো রক্ত!
না না– লাল নয়, সবুজ! সবুজ রঙে রাঙাবো।  


ওহঃ কি সুন্দর! কি সজীব! কি নিঃসীম সবুজ!  
ভাল লাগার সবুজ পরশ ছড়িয়ে পড়তে পড়তে
আতঙ্ক গ্রাস করে নিলো সকল আন্তর ভূমি
প্যাঁচালো সবুজ সাপের লকলকে জিভের মত  
চেপে ধরল কণ্ঠ দেশ সবুজাভ আবীর ওড়ানো
                                   অনাহুত আঙুল—


না- সবুজ নয়, কিছুতেই নয়—
গৈরিকে রাঙাব মন; বৈরাগ্যে মুড়ে দেব অশান্ত মনন।
তমসো মা জ্যোতির্গময়---
প্রশান্তিতে বুজে এলো চোখ, ফিল গুড হরমোন যখন
কুলকুল করে বইছে মস্তিষ্কের প্রকোষ্ঠে—
বুকের মধ্যে ফিরে এলো এড্রিনালিন ঝড়
দাউ দাউ করে জ্বলছে আদিগন্ত চরাচর
এ তো আগুনের রঙ! জ্বালিয়ে পুড়িয়ে
                            ছারখার করে দেওয়ার রঙ—


রক্ষা কর, রক্ষা কর— ত্রাহি মাম— ত্রাহি মাম—
না না—সব, সব রঙ বাতিল—  
                 নীল, বিশুদ্ধ নীলেই সাজাবো বাগান।  
নীল রঙে রাঙিয়ে দিলাম- অপূর্ব! অপূর্ব দ্যুতি!  
শান্ত, সমাহিত, সমাসীন—
প্রবল সুখানুভূতির আবেগে যখন জুড়িয়ে আসছে শরীর—
হঠাতই মনে হল—
নীল-! এ তো শূন্যতার রঙ, ছোঁয়া যায় না, ধরা যায় না
বোঝা যায় না, হয়ত বা কামনা করাও যায় না…


কেমন যেন হতাশ লাগছে, অবসন্ন -
অপসৃয়মান আলোক বর্তিকায় তাকিয়ে থাকতে থাকতে  
মনে হল সবকটা রঙ মিলে মিশে একাকার—
                     এ ম্যাগোঃ! কি কালো! কি কুচ্ছিত কালো!
এতো কালো— এও কি পৃথিবীর হয়!  


ভয় মেশানো বিস্ময় দৃষ্টিতে দেখতে দেখতে
একসময় ভাল লাগল, ভাল লাগা ছড়িয়ে পড়তে লাগল
শিরায়, উপশিরায়, স্নায়ু তন্ত্রীতে—
কালো! কালোর মত উজ্জ্বল কোন রঙ নেই
কালোর কোন বিভিন্নতা নেই, বাছ বিচার নেই
বৈরিতা নেই, ব্যস্ততা নেই,
কালো! শুষে নিতে পরে সব—  
                                 সব, সব কিছু—।।