নম্বরপত্র গুলো পুরনো একটা কাগজের ফাইলের ভিতরে ছিলো।
তালকানা মানুষ। খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
এ গুলো এখন আর চেনার কোনো উপায় নেই।
বারো আনাই নাম না জানা পোকার পকেটে। হাড্ডি চর্ম সার।  


এ গুলোতে জড়িয়ে আছে মায়ের স্বপ্ন। বাবার সাহস।
ভাইয়ের শাসন। বোনের বুনো আদর।
কারো কারো  প্রতিহিংসার গাঢ় বুনট। বাঁকা চোখের শ্যেন দৃষ্টি।
সেসব কিছুই এখন ছন্নছাড়া।
স্মৃতির পাতা হাতড়ানো ছাড়া এ গুলোর আর কোনো অন্য মূল্য নেই।  


সাত বছরের বুড়ি মেয়েটা বারবার জানতে চাচ্ছিল, বাবা ওগুলো কী?
আমি কিছুই বলতে পারিনি।
বলতে পারিনি ওগুলো তোমার দাদুর স্বপ্ন। তোমার দাদা ভাইয়ের শক্তি।
চোখের কোণটা ভিজতে দেইনি।
বেসামাল পরিস্থিতিতেও ঠিক ঠিক সামলে নিয়েছিলাম।
পোড় খাওয়া মানুষ সব পারে। আমিও পেরেছিলাম।


একটা চাকুরি জুটাতে পারিনি বলে সখিনা আমার হয়নি।
বুকের পাঁজর ভেঙে গিয়েছিলো। আমি ভেঙে পড়িনি।
ওর বাবা-মায়ের ওতো স্বপ্ন ছিলো! সে ভাঙতে পারেনি। অথবা  
ভাঙেনি। বাবা-মাকে বলার দুঃসাহস নেই।
সমাজটা তখন বেশ ছিলো। এখন জানি কেমন হয়েছে। মূল্যবোধ নেই।


এখনও এমনি কতো নম্বরপত্র পথে বিকোয়। মামা নেই। চাচাও নেই।
বাবার জমি-জিরাতও নেই।
কেবল জানা আছে কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়। মুরদ নেই।
ফালুর মুরদ ছিলো না। মুরদ ছিলো না ফালুর বাপের।।


আরেক দিকে কালু। মুরদ আছে। নম্বরপত্র কিনে নিয়েছে।
বাপের বেটা। ভর্তি পরীক্ষায় টিকেনি। টিকে গেছে। সখিনা এখন তাঁরই!!