তখন দেবরাজ ইন্দ্র রাজ সভায় বসা। গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলছে।
স্বর্গ রাজ্যের কোথায় যেন কিছু একটা সমস্যা চলছে। কেউ ধরতে পারছে না।
হঠাত একটি নক্ষত্রের পতন হলো। টু শব্দটি পর্যন্ত হলো না।
সবাই অবাক চোখে কেবল তাকিয়ে দেখলো। কিছুই করার ছিলো না।
দেবরাজ তদন্ত কমিটি গঠন করতে চাইলেন। অন্যরা করতে দিলো না।  


ইন্দ্র পত্নী তখন পাঠে নিমগ্ন ছিলেন। তিনি কবিতা খুব ভালোবাসেন।
কেউ একজন দৌড়ে এসে তাঁকে নক্ষত্র পতনের খবরটি জানালো।
তিনি বই থেকে মুখ না তুলেই বললেন, তাতে তোমার কী হয়েছে?
বেচারার মুখ থেকে আর কথা বেরোল না। ভয়ে ভয়ে প্রস্থান নিলেন।
মনে মনে ঈশ্বরকে স্মরণ করলেন। যাক বাবা, বড় বাঁচা বেঁচে গেছি।


স্বর্গ রাজ্যের শখের গোয়েন্দা দল নিজেরাই তদন্ত শুরু করলেন।
বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহে খোঁজ-খবর নিলেন। কোথাও কোনো ক্লু পাওয়া গেল না।
তারা কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। নক্ষত্র না হয় খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়।
ধ্বংসাবশেষ তো পাওয়া যাবে। আজব ব্যাপার। মাথা-মুণ্ড বুঝা যাচ্ছে না।
গোয়েন্দা দলের কেউ কেউ এই পরাজয় কিছুতেই মানতে পারছেন না।  


বেশ কিছু দিন গত হলো। কোনো সুরাহা হলো না। কেউ কেউ তদন্ত কাজ
ক্ষান্ত দেওয়ার পক্ষে মতামত দিলেন।
এমন সময় দেবর্ষি নারদ এসে দেবরাজ ইন্দ্রের স্মরণাগত হতে বললেন।
সকলে মিলে দেবরাজের স্মরণাপন্ন হলেন। তিনি মনোযোগ দিয়ে সব শুনলেন।
তারপর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিলেন।
বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহের জন্য আলাদা আলাদা তদন্ত দল গঠন করে দিলেন।


তখনই মহাবিপত্তি ঘটলো। কোনো তদন্ত দলই পৃথিবীতে আসতে চায় না।  
পৃথিবী সম্পর্কে তাদের ধারণা ভালো নয়। বিদঘুটে টাইপের ধারণা।
তাঁরা মনে করেন, এ বড় কুটিল; এ বড় জটিল!!
এ সংক্রান্ত একটি উপপত্র লিখে তাঁরা তদন্ত কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করলেন।
দেবরাজ ইন্দ্র উপপত্রটি পড়ে দেখলেন। ভাঁজ করে এক পাশে রেখে দিলেন।  
তারপর আর কিছুই বললেন না। চুপ করে থাকলেন।।