রোজই কতো খবর কাগজে ছাপা হয়। কতো খবরই ছাপা হয় না।
শান্তির মা যে মরে গেছে, সেই খবরটিও কেউ ছাপে না। তাঁর কী দোষ ছিলো?
দুই জন ভদ্র মহিলা ঝগড়া করছিলো।  শান্তির মা মেটাতে গেলো।  
ঝগড়া তো থামলোই না; কেবল শান্তির মাকে বেঘোরে প্রাণ দিতে হলো!  
পত্রিকার সম্পাদক বাবুকে একটা পাদটীকা লিখতে অনুরোধ করেছিলাম।
তিনি লিখলেন না। ভয় পেয়েছেন। প্রভাবশালীদের চাপ আছে!!


ক’দিন আগে জনসাই হাওরে আগুন লেগেছিলো। মাঠ ভরা ফসল সব
পুড়ে মরলো। হাজার হাজার মানুষ চারপাশে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখলো।
কেউ আগুন নেভাতে আসতে সাহস পেলো না। কেন সাহস পেলো না?
কেউ কেউ বলছে, আগুন লাগেনি। আগুন লাগানো হয়েছে।
একটি পত্রিকার রিপোর্টার নিজেই গিয়েছিলেন। কিছু ছবিও তুললেন।
খবরটি খবরের কাগজে আর কোনোদিনই আসলো না। কেন আসলো না?
সবাই জানে। কেবল মুখ ফুটে কেউ বলতে পারে না।


প্রকাশ্য দিবালোকে একজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো।
খবরের কাগজে খবরটি পাওয়া গেলো না। মামলা করতে গেলো। ভয় দেখালো।
আপোষ-রফার জন্য চাপ শক্তি প্রয়োগ করা হলো। কাজ হলো না।
অনেক নাটকের পর মামলা নেয়া হলো। মামলা আদালতেও গড়ালো।
কোনো সাক্ষী পাওয়া গেলো না। আসামি বেকসুর খালাস পেলো।
একজনের জীবন গেলো। টাকাও গেলো। পরিজনের নিরাপত্তাও গেলো।


একজন বাসায় ঘুমিয়ে ছিলো। পরদিন সকালে তাকে আর পাওয়া গেলো না।
কী হয়েছে কেউ বলতে পারলো না। অনেক খোঁজাখুঁজি করা হলো।
নানান জায়গায় ধর্না দেওয়া হলো। খবরের কাগজের অফিসেও যাওয়া হলো।
তারা বিষয়টি আমলেই নিলো না।  
আরেকজন বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছিলো । কাগজওয়ালা লিখে দিলো তিনি মঙ্গল
অভিযানে গেছেন। এই মিথ্যেই সত্যি হলো। কেউ কেউ তা বিশ্বাস করলো।  
অবিশ্বাস করার কোনো হেতু পদই কেউ খুঁজে পেলো না।  


একটা সময় খবরপত্রের প্রতি মানুষের আস্থা ছিলো। দেদার পাঠকও ছিলো।
এখন আস্থাও তেমন নেই। পাঠকও তেমন নেই। কেন নেই সবাই জানে।
মানুষ নিরপেক্ষতা ভালোবাসে। পক্ষপাত ভালোবাসে না।
কেউ কেউ চাটুকারিতা পছন্দ করে। তবে অধিকাংশই চাটুকারিতা পছন্দ করে না।