কে জানতো সেই রাতে ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ হবে? কে জানতো? কে---?
পিশাচ বাহিনী গোপনে গোপনে এতো প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলো!
কে জানতো একটু পরেই রাত্রির নীরবতা খান খান করে ভেঙে যাবে,
এক সাথে গর্জে উঠবে
একে ৪৭ এর তপ্ত বুলেট,হাত বোমা আর ঘাতক ট্যাংক!
কিছু বুঝে উঠার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে ঘুমন্ত রাত!
নিরপরাধ, নিষ্পাপ হাজারো প্রাণের একটানা আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠবে
নিস্তব্দ রাত্রির বাতাস!
খুন রাঙা হবে বসতবাটি, উঠোন, চার দেয়ালের কড়িকাঠ
রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে বিরান রাজপথ, কে জানতো!
মানব সভ্যতার ইতিহাসে এতো বর্বরতা, এতো রক্তপাত কেউ দেখেনি!
কেউ কোনোদিন শুনেও নি!!


মেহেদি রাঙা হাতে সখিনা বুঝতেই পারলো না স্বামীর সোহাগ,
তার আগেই নরপিশাচ হায়েনার ধারালো নখের আঁচড়ে ক্ষত-বিক্ষত হলো!
তাঁকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া গেলো না!  
হয়ত সে কোনো এক বধ্য ভূমিতে ঠিকানা খুঁজে নিয়েছে!


ভয়ার্ত শিশু অয়ন মায়ের বুকে জীবনের শেষ নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছিলো
আর আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে চিৎকার, চেঁচামেচি করছিলো; মমতাময়ী মা,
নিজের সব কিছু বিনিময়ে নাড়ী ছেঁড়া সন্তানের জীবন বাঁচাতে চেয়েছিলো;
নরপশুদের দল তবু তাকেও বাঁচতে দিলো না।  
মায়ের কোল থেকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে মাটিতে আছড়ে মারলো! উহ!
কী বর্বরতা! কী নিষ্ঠুরতা!


কালসাপের নাম কে না শুনেছে? সেও তো এতো বেদিল নয়,
এতো বেরহম নয়।
একরাত্রির পৈশাচিকতা ইতিহাসের সমস্ত নিষ্ঠুরতাকে হার মানিয়েছে।
পাপিষ্ঠদের দানবীয় অত্যাচার-অবিচারে বদলে গেছে মধ্যরাতের সংজ্ঞা।
এখনও মাঝরাতে ঘুম ভেঙে ভয়ার্ত চিৎকার করে উঠে সোহাগি
এখনও তাকে তাড়া করে ফিরে সেই একটি কালরাত ও পিশাচবাহিনী!!