সাত রাস্তার মোড়ে রোজই দেখি একা একা দাঁড়িয়ে আছেন  
লোহার মতো শক্ত দুটি হাত, আর তাঁর ভাবলেশহীন    
ইস্পাত কঠিন মার্বেল পাথরের খোদাই করা এক জোড়া চোখ!  
সেই চোখ অপলকে তাকিয়ে দেখছে একটি চৌদ্দতলা আকাশ!
ক’দিন আগেও যেই আকাশের জন্মই হয়নি, সেই আকাশ;  
এখন বুক উঁচিয়ে সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে আরেক আকাশের গায়!  


গত ক’দিন ধরেই চৌদ্দতলা এই আকাশের জন্মদিন পালিত হচ্ছে!
অভ্যাগতরা আসছেন, রঙ তামাশা করছেন;
অতঃপর উদর পূর্তি করে যে যার মতো পথ গুনছেন!
সেই আকাশের ভেতরে মুহুর্মুহু বর্ণিল আতশ বাজি আর
স্বপ্নিল কারুকাজে --------------
ক্ষণে ক্ষণে ঝলমল করছে তার আজন্ম লিখিত জন্ম দাগ!
কেবল সেই ক্ষণজন্মা হাত দু”টি, যে হাতের কোমল পরশে প্রাণ
পেয়েছিলো এই চৌদ্দতলা আকাশ; সেই হাত দুটি নিরন্ন!
হাজার হাজার অতিথি নেমন্তন্ন পেলেও তিনি পাননি!
অথচ গেলো প্রায় আড়াই বছর তিনি সন্তানের মতো এই আকাশকে
ভালবেসেছেন! তিল তিল করে সযত্নে গড়ে তুলেছেন মহীরুহ!  


সেই আকাশের মালিক কতোবারই তো সামনে দিয়ে গেলেন,
অদৃষ্টের কী নির্মম পরিহাস তাকে তিনি চিনতেই পারলেন না!
যে লৌহ কঠিন ঘর্মাক্ত হাত দুটির নীরব চুম্বন প্রতিটি ইটে গেঁথে আছে,
সেই হাত দুটি আজ বড় বেশি পক্ষাঘাত গ্রস্ত! রাজমিস্ত্রি
নামক জীবন্মৃত অলৌকিক কংকালে বন্দি----!!  


আমি তাঁর এক হাতে ফল, আরেক হাতে ফসিল দেখেছি
আমি তাঁর দু’চোখে সাত আকাশের নীরবতা দেখেছি
দেখেছি ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ধ্বংসস্তূপের ভেতর আটকে পড়া
পঙ্গু অসহায় রোগিণীর মতো গগন বিদারী চিৎকার!  
যে চিৎকার প্রকাশের কোনো ভাষা আমার জানা নেই !!