========================


মুগ্ধ হয়ে শুনেছি সহস্রবার
বিনম্র আনুগত্যে তোমার বিনীত কণ্ঠে
অমৃত সম সে বাণী,
তুমি মনিব আমি চাকর।
কি নির্মম পরিহাস
কি নিষ্ঠুর হাস্যকর
তবু কৃতার্থ হয়ে শুনি
তুমি থাকো প্রাসাদোপম অট্রালিকায়
আর আমি নিঃস্ব, রিক্ত, অসহায়
ঘুমাই রেল স্টেশনে, ফুটপাতে, রাস্তায়
কিংবা খোলা আকাশের নিচে
পার্কের কোনায় এক চিলতে বেঞ্চিতে।
তুমি চলো মার্সেডিজে
আমি চলি খালি পায়ে
তীক্ষ্ণ নুড়িতে রক্তাক্ত পদচিহ্ন রেখে পথে।
রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে
আমি ঠাঁই দাঁড়িয়ে, হাসিমুখে
করি সম্ভাষণ, ছিটাই পুষ্পরেণু।
পরম ভক্তিতে, তুমি নতজানু
হাত করজোড়ে বলো
আমিই মনিব, তুমি চাকর
আমি শুনি আর ভাবি
তোমার টেবিলে থাকে খাবারের স্তূপ
আর আমি
ডাস্টবিনে খুঁজি, উচ্ছিষ্ট এঁটো।
অভুক্ত নেড়ি কুকুরের সাথে
হাড়ের দখল নিয়ে প্রাণান্ত কাড়াকাড়ি।
তোমার গায়ে লক্ষ টাকার সুগন্ধী
আমার সারা গা'য়ে মাটি।
তুমি ইচ্ছে করে নগ্ন হও
আর আমি নগ্ন থাকি।
তুমি হাতে অস্ত্র তুলে দাও
আমি রক্তের হোলি খেলায় মুক্তি খুঁজি ।
তোমার গাড়িতে মুক্ত পতাকা উড়াও
আমি নিজ রক্ত স্নানে
সে পতাকা পবিত্র রাখি।
আমার রক্তে, ঘামে, অশ্রুতে বিকশিত হও
তারপর আকণ্ঠ তৃষ্ণায় ঝাপিয়ে পড়ো
শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত নিংড়ে নাও  
যতক্ষণ না দেহে প্রাণ থাকে।
আর অমৃত সেই বাণী
থাকে সুদৃশ্য ফ্রেমে বন্দি
নিগূঢ় যন্ত্রনায় দীর্ঘশ্বাস হয়ে
আশ্রয় খোঁজে দেয়ালে, প্লেকার্ড কিংবা
তোমার মহাসভার অমৃত বচনে।


শুধু একটিবার,
যখন তুমি ভিক্ষের ঝুলি হাতে
হাত করজোড়ে, অবনত মস্তকে
করুণা ভিক্ষে করো
ভোট ভিক্ষে করো
শুধু সেই একটি বার মনে হয়,
আমিই মহারাজাধিরাজ, আমিই মনিব
তুমি নিঃস্ব, রিক্ত
নিতান্তই মামুলি একজন চাকর।


==========================