১৫-১৮ বছরের একটা ছেলের মাথার
উপর দশ লক্ষ টাকার সুদের বুঝা চাপিয়ে
দেশের বাহিরে পাঠিয়ে পরিবার ভাবছে
এবার আমাদের কষ্টের দিন শেষ,
পায়ের উপর পা তুলে দিন কাটানো
আর বেশি দূরে নেই।
পাশের বাড়ির মন্ডল বিল্ডিং করেছে
এবার আমাদের বাড়িতেও হবে,
মাঠে জমি কেনা শুরু হবে
দেখি কে আমাদের থেকে বেশি জমি কিনত পারে?
পরিবার ভাবল, প্রতিবেশিকে টাকার খেলা দেখাবে
কিন্তু একবারও ভাবেনি এই পিচ্চি ছেলেটার কাধে
এমন একটা বিশাল বোঝা চাপিয়ে দিলে
সে সহ্য করতে পারবে কিনা।
ছেলেটি পারোক আর না পারোক পরিবারের কিছু মানুষতো
সুখে থাকতে পারবে এইটাই বড়,
ছেলেটি বাচল নাকি মরল তা দেখার বিষয় না।
অথচ ভেবে দেখেনতো - যে ১৫-১৮ বছরের ছেলেটা
খেলার মাঠে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় থাকার কথা
সে কিনা ভিন্ন পরিবেশে ভিন্ন দেশের মানুষের সাথে শ্রম বিক্রীতে ব্যস্ত,
মাস শেষে বাড়িতে টাকা পাঠিয়ে একটু
তৃপ্তি পাওয়ার পরিবর্তে পাচ্ছে তাচ্ছিল "কেন এত কম টাকা"
পরিবারের এই চাপটা সহ্য করতে না পেরে
এই কিশোর ছেলেটা একদিন বৈধ কোম্পানি
থেকে পালিয়ে অবৈধ পথে টাকা উপার্জন করতে চেষ্টা করে,
সেখানেই শুরু হয় তার অমানুষিক কষ্ট।
দিন রাত ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২৪ ঘন্টাই পরিশ্রম করতে চাই,
কেননা তার মাথার উপর ১০ লক্ষ টাকা সুদের বুঝা।
দেখতে দেখতে একদিন লোন শেষ হয়,
পরিবারের মানুষগুলি অল্প অল্প দূরত্ব এখন রিক্সায় করে যায়।
বাজারের দামী মাছটা বাড়িতে আসে,
সব কিছুতেই সবাই বিলাসী জীবন জাপন শুরু করে।
কিন্তু ঐ পরবাসে বৈধ কাগজ ছাড়া
অমানষিক জীবন যাপন করছে সদ্য কিশোর পেরিয়ে
যৌবনে পা রাখা একটি ছেলে।
এখানে আমার হিসাবেও একটু ভুল আছে,
১০ লক্ষটাকার সুধ আর পরিবারের বিলাশী জীবন
উপহার দিতে গিয়ে ছেলেটি এতদিনে
৩০/৩২ বছরের একজন পরিপূর্ণ যুবক।
কিন্তু যে কেও দেখলেই বলবে এই ছেলেটার বয়স ৪০/৪৫,
কেননা তার ভাঙ্গা চোয়াল আর গর্তে
ঢুকে যাওয়া চোখ দেখে যে কেও অনুমান করবে
ছেলেটির বয়স ৪০ পেরিয়ে গেছে.........
আবেগ ভুলতে শেখা ছেলাটা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে,
প্রতিটা বিমান উড়ার শব্দের সাথে
নিজেকে কল্পনা করে বিমানের যাত্রী হিসাবে।
কিন্তু দূর্ভাগ্য বৈধ কাগজ না থাকায় ছেলেটি উড়তে পারেনা............