চমৎকার ভাই চমৎকার
তোমার এখন সম্পদের অহংকার
তুমি ছিলে গরিব
আমিও ছিলাম তাই
একঠোঙা মুড়ি কিনে খেয়েছি একসাথে
একটা রুটি ছিঁড়ে আধাআধি খেয়েছি দুইজনে
তখন দুজনেরই দুঃসময়
দুর্ভাগ্যের কালোমেঘ উভয়ের আকাশে ।
তারপর একদিন যেতে যেতে পথে দেখি
বড় একটা অচল বড় নোট রাস্তায় আছে চেয়ে
আমি দেখেও নাদেখার করেছি ভান
আড়চোখে দেখি তুমি কুড়িয়ে নিয়ে সেটা
সযত্নে পকেটে রেখেছো তুলে ;
তারপর একদিন সেটাই সন্ধ্যার খরিদ্দারের ভীড়ে দোকানে কিনে চাল
মেশালে কাঁকর
বেড়ে গেল ওজনে বেশ ,
দুর্মূল্যের বাজারে বেচে সেই চাল
শুরু তোমার পরিবর্তনের খাতাখোলা ।
ভাঙা কারখানার পুরানো এক হাজার ইটের দামে
সরিয়েছো দশ হাজার ইট রাতের আঁধারে
সেই ইটেই গড়েছো ইমারত , দিয়েছো দোকান ,
তারপর যাতেই দিয়েছো হাত
খুলে গেছে কপাল তোমার
এসে গেল পোশাকের বদল
লম্বা পাঞ্জাবি মাথায় টুপি হাতে তসবিহ দেখে
তোমাকে পীরজাদা মনে করে অচেনা কেউ ;
ইতিমধ্যে কেটে গেছে বহু দিন মাস বছর
তুমি আগের চেয়ে অনেক বেশি বুদ্ধিমান
উপকারের ছলে কিনে দিলে জমি
যে কেনে সে জানে না তোমার আছে কমিশন ;
কেউ বিশ্বাস করে এনে দিতে বলে কিছু
চার হাজার টাকায় কিনে নিয়েছো সাড়ে ছয় হাজার ,
হু হু করে বেড়ে গেল ধন , তুমি অনেক চৌকস ;
কথায় কথায় তুমি নিজেকে মূর্খ বলে জাহির করো
অথচ সেই মূর্খতা তোমার শিক্ষিত বন্ধুরাও খায় ঘোল
তোমার চেহারা ফুলে ঢোল
তোমার সব কিছুতেই কমিশন
রাজমিস্ত্রি ঠিক করে দিলে কমিশন
ইট কিনে দিলে কমিশন
মাটি কাটার মজুর ঠিক করলে কমিশন
ভাইয়ের কাছে কমিশন
বৌয়ের ভাইয়ের কাছেও কমিশন
লাভছাড়া এক পাও চলো না ।
অথচ দ্যাখো
আমি যে তিমিরে সেই তিমিরেই আছি পড়ে আছি
এর জন্য আমার কোন আক্ষেপ নেই
তুমি বড় হও , অনেক বড় হও
প্রাসাদের পর প্রাসাদ গড়ো
তারপর --- তারপর
তোমার ছেলেও হয়ে গেছে তৈরি
সে হয়তো একদিন তোমাকে যাবে ছাপিয়ে
কোন দিন বা যোশীমঠের মতো ক্লাউডবার্স্টে
কোথায় ভেসে যাবে  ,
ধূলিসাৎ হয়ে যাবে তোমার ইমারত ।