মাননীয় সভাপতি
উপস্থিত মান্যগণ্য নেতৃবৃন্দ
দূর দূরান্ত থেকে আগত  সমবেত জনমণ্ডলী
আমার কিছু বন্ধু বান্ধব এখানে এই ব্রিগেডের সমাবেশে
উপস্থিত হয়েছেন আমি আসছি শুনে
আমার কিছু প্রিয় সহকর্মী এখানে এসেছেন
আমি আপনাদের সামনে কিছু বলতে চাই
অবশ্য স্বেচ্ছায় এখানে বক্তৃতা দিতে আসিনি
আমাকে আহ্বান করে আনা হয়েছে
আমি বলেছিলাম আমি তো রাজনীতি করিনে
রাজনৈতিক বক্তব্যও রাখতে জানিনে
তবুও আমাকে বলা হয়েছিল আপনি তো কবি
না হয় কবিতার কথা শোনাবেন আমাদের সভায়
তাই আমি এসেছি আপনাদের দরবারে
কবিতার সুখদুঃখের কথা শোনাতে ।
প্রথমেই বলি আমার বক্তব্যে অসঙ্গতি খোঁজার চেষ্টা
না করে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে বিবেচনা করবেন
কবিতা তো মানুষের সুখদুঃখের গাথা
মনের পুঞ্জীভূত উদ্বেলিত দুঃখ দূর করে
কবিতা তো ভালোবাসতে শেখায়
কবিতা তো চলার পথ দেখায় !
কবিতা তো টগবগিয়ে ছুটে চলা দুরন্ত ঘোড়ার মতো
কবিতা তো পাহাড়ের নির্ঝরের মতো
কবিতা রাজনৈতিক দলের মতো বিভেদ সৃষ্টি করে না
কবিতা মানুষকে ঘৃণা করতে শেখায় না
মাইক্রোফোন আমার হাতে এখন
আমি যা বলি কান পেতে শুনুন হে সুবিশাল জমায়েত
আপনারাই ভাবুন আপনারা কী আশা করেন
কেমন ভাবে জীবনযাপন করতে চান
নিরুপদ্রব শান্তিপূর্ণ বসবাস নাকি সারাক্ষণ
রণং দেহি মারমার-কাটকাট পরিবেশ
স্বাধীনতা আপনাদের , ভাবনা আপনাদের
আপনারা নিজেরাই ঠিক করুন
যাদের প্রতিপক্ষ ভাবছেন তাদের সাথে লড়াই করতে ?
তাদের উৎখাত করতে নাকি তাদের রক্তপান করতে ?
আপনারা কি চাইছেন দেশে মাৎস্যনায় যুগের প্রত্যাবর্তন
নাকি শান্তপূর্ণভাবে সহনাগরিকদের সাথে সহাবস্থান ?
যেটা খুশি আপনি চাইতে পারেন
কারণ আপনার মননই আপনার ভাবনার হাতিয়ার
স্বাধীনতা আপনার , বিবেচনাও আপনার !
আমি রাজনীতি করিনা , রাজনীতি থেকে দূরে থাকি
তবে আমি চাই দেশ ক্রমোন্নতির পথে এগিয়ে চলুক
মারামারি হানাহানি কাটাকাটি বন্ধ হোক
ভাইয়ে ভাইয়ে আগের মতো মন খুলে মেলামেশা করি
ইট বগলদাবা করে হাঁটবো না
পরস্পরে দেখা হলে যেন হাসিমুখে কুশল বিনিময় করি
আমি আগেও বলেছি , আবারও বলছি
রাজনীতি আমার পছন্দ নয়
রাজনীতি থেকে আমি সব সময় দূরে থাকি
আমার এই বক্তৃতায় কোন রাজনৈতিক গন্ধ পাবেন না
আমি কোন দলের হয়ে ওকালতি করছি না
কোন বিশেষ প্রতীকের সুপারিশ করছি না
আমি চাই দেশের জনসাধারণ যাতে দুবেলা
ডাল-ভাত-শাক খেতে পাক
( মাঝেমধ্যে মাছ মাংস অবশ্য কাম্য )
ঘর-জমি-বৌ নিয়ে শান্তিতে থাক
পরিবার আত্মীয় চাকরি ব্যবসা নিয়ে থাক
যে যার ধর্ম পালন করুক না করুক সে তার নিজের ব্যাপার
এসব নিয়ে আমরা মাথা ঘামাবো না
সময় এসেছে নিজেকে ভাবার
পবিত্র গীতার একটা কথা "আত্মনাং বিদ্ধি"
অর্থাৎ নিজেকে জানো ; আমরা দেখবো
প্রতিবেশীর বিপদে আমি কতটা পাশে দাঁড়াতে পেরেছি
আমরা দেখবো পথ-চলতি বিপন্নকে কতটা সাহায্য করি
কোন ইভটিজিং দেখে আমরা কতটা ঝাঁপিয়ে করি
আমরা দেখবো দেশের উন্নয়নে আমার কী অবদান
আমার সাময়িক জীবৎকালে আমি কী দিয়ে গেলাম
দেশের জন্য , দশের জন্য
আমি কি কোন বৃক্ষরোপন করেছি ?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমার কী অবদান আছে ?
আসুন আমরা এসব নিয়েই ভাবি আগে
তারপর না হয় চিন্তা করে দেখবো
কোন্ দল এসব চায়
যে-দল দেশের পক্ষে আমরা তার পক্ষে
যে-দল দশের পক্ষে আমরা তার পক্ষে
আমরা চাই নিরাপত্তা , নিরাপত্তা যেমন আগ্রাসন থেকে
নিরাপত্তা তেমন হিংসাছড়ানো দল থেকে
নিরাপত্তা তেমন হিংসাছড়ানো নেতাদের থেকে
আমাদের সার্বভৌমত্ব , আমাদের সাংবিধানিক অধিকার
রক্ষা করার আশ্বাস যে-দল দেয় আমরা তার পক্ষে
আমরা সেই দলের পক্ষে যারা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে
আমরা সেই দলের পক্ষে যে-দল রুটি-রুজিতে বিঘ্ন না ঘটায়
দেশ এগিয়ে চলুক , জনগণ এগিয়ে চলুন সুস্থির লক্ষ্যে
এখন আপনারাই ঠিক করুন কাকে চান
নির্বাচন করার স্বাধীনতা আপনার নিজের হাতে !