সবাই কেমন ভুলে যাচ্ছে তোমায়
কই আমি তো পারছিনে
না-ভোলার যাতনায়
আমিই যে পুড়ে মরছি ;
বড় খোকা যে তুমি-অন্ত-প্রাণ ছিল
সেও দেখি , এখন ভুলে থাকে
নানান কাজে অকাজে নিজেকে জড়িয়ে রাখে
মাঝে মধ্যে অবশ্য তোমার কথা বলে
কিন্তু সেও তো কম !


আর মেজ খোকা যে তোমার
নীল শীতল দেহ ছেড়ে ওঠেনি
শিশুর মতন ডুকরে ডুকরে  কেঁদে উঠেছিল
সেও দেখি এখন তোমার কথা
কত কম উচ্চারণ করে --
হয়তো সেও তোমাকে ভুলেছে
কিংবা নিজেকে ভুলিয়ে রেখেছে ।


বড় খুকিটাও দেখি নিজের নাতিকে নিয়ে
কত ব্যস্ত ! অবশ্য তার নিজের শরীরটাও
তাকে কম যাতনা দিচ্ছে না
হয়তো এই যাতনা সেই যন্ত্রণাকে
দূরে সরিয়ে দিয়েছে ।


ছোট খোকা আর মেজো মেয়ে
তারা তো যে যার সংসার নিয়েই রয়ে গেল
তোমার কথা ভাবার
তাদের যে সময়ের বড় অভাব ।


ছোট মেয়ে যাকে তুমি অনেক দূরে
সংসার পেতে দিয়েছ
তাকে তো দেখিনে -- মাঝে মাঝে
সে ফোন করে -- কথা বলে
আমার শরীরের খবর নেয় -- আর
তোমার কথা উঠলেই
কেঁদে ফেলে টেলিফোনেই ।


ছেলেমেয়েদের মতো আমি যদি
তোমাকে ভুলতে পারতাম !
তুমি নেই -- একথা তো একবারও মনে হয়না
আজান শুনলেই মনে হয়
তুমি মসজিদে আছ এখনও
এখনও জানো ভুল করে আয়না চিরুনি নিয়ে
দাঁড়িয়ে থাকি , তুমি অজু সেরে চাইবে বলে
তোমার গামছাটা পাট করে
হ্যাটের কাছে রেখেছি
তোমার টুপি , তোমার জায়নামাজ
তোমার তসবিহ আমার চোখের সামনে
প্রতি পলেই মনে হয়
এই বোধ হয় তুমি ডাকলে
আর এই ডাক শোনার জন্য
আমি আর কতকাল অপেক্ষা করব !